বাবা মায়ের প্রতি সন্তানের কর্তব্য

 বাবা মায়ের প্রতি সন্তানের কর্তব্য:


                  বাবা মা শব্দ দুটি এই পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে মধুর, সব থেকে মায়ার।এই দুটি মানুষের খাঁটি ভালবাসার ফল আমরা। আমরা কখনোই এই সুন্দর পৃথিবী টা দেখতে সক্ষম হতাম না বাবা মা না থাকলে।তাই এই দুটি মানুষ আমাদের প্রাণের থেকেও প্রিয়। তাই ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক, হাসি খুশিতে থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা মা।

 
সন্তানের কর্তব্য
                        দু'জনে খুুুুুশির সন্ধানে 
                     চিত্র সূত্র- pixabay.com 


          কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমানে সবথেকে বেশি অবহেলা, অনাদরে থাকে এই দুটি মানুষ। এ পাপের গভীরতা আমরা উপলব্ধি করার ক্ষমতা আজ হারিয়েছি। তাই তো নিজের খাওয়া পড়ার দাবি নিয়ে বৃদ্ধ বয়সে তাঁদের ছুটতে হচ্ছে কোটে, আদালতে। আমরা- মানব জাতিরা নিজেকে মানুষ রূপে জন্ম গ্রহণ করার জন্য গর্ববোধ করি। নিজেদের সভ্য সমাজ তৈরির কারিগর বলে দাবি করি, অথচ যে জন্ম- পরিচয় নিয়ে এতো লম্প ছম্প এতো গর্ভ, সেই গর্ভের কারিগরকেই দাঁড় করিয়ে দিচ্ছি নিজেদের সামনে ভিখারি রূপে!

             বর্তমানে মানুষের মনুষ্যত্ব বোধটাই তলানিতে গিয়ে ঠেকছে।আর এটা যত তলানিতে গিয়ে ঠেকবে তত পৃথিবী ধ্বংসের মুখে পতিত হবে। যাঁদের আদর্শে,  শিক্ষায়, ভালোবাসায় একটা সময় আমরা প্রতিষ্ঠিত রূপে সমাজের সামনে দাঁড়াতে শিখি,সেই তাঁদের ই আমরা ফেলে দিই অনিশ্চিত জীবনের দিকে। যে চারটে হাত না ধরলে আজ আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখতাম না, সেই হাত গুলো আজ জীর্ণ- শীর্ণ, ক্লান্ত, বলিরেখায়  পরিপূর্ণ বলে ধরতে ভয় পাচ্ছি। 

          আমরা যখন ছোট থাকি তখন বাবা মা চেষ্টা করে আমাদের সব থেকে আরামদায়ক স্থানে রাখতে, আমরা একটু খানি কেঁদে উঠলে তাঁরা যত দূরেই থাক না কেন ঠিক আমাদের কান্নার শব্দ তাঁদের কানে গিয়ে পৌঁছায়। এ এক অদ্ভুত টান, অদ্ভুত মায়া। 

         আমাদের ভালো রাখতে, বাবা মা তাঁদের সব সখ, আল্লাদ,  চাওয়া পাওয়া, ইচ্ছা অনিচ্ছা,  বিসর্জন দেয় কোন কষ্ট ছাড়াই হাসি মুখে। অথচ আমরা বড় হয়ে সব কিছু ভুলে যায়। তাঁদের হাজার ও দোষ ত্রুটি খুঁজতে শুরু করি। সত্যিই যদি কেউ গভীরভাবে এটা নিয়ে ভাবে তাহলে সে তাঁর বাবা মা কে মাথায় তুলে রাখবে আজীবন।

           কিন্তু সমীক্ষা বলছে অন্য কথা। আমরা বাবা মার প্রতি যে নির্যাতন করি তার চিত্র দেখলে গা শিউরে ওঠার মতো। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা যে তাঁদের উপরে নির্যাতন করি সেটা মানতেই চাই না। আমরা আমাদের স্বপক্ষে এক গাদা অজুহাত খাঁড়া করি এবং বাবা মায়ের দায়িত্বভার থেকে নিস্তার পেতে চাই। 

          সমীক্ষা বলছে,  বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের শারীরিক সক্ষমতা যত কমতে থাকে,  সমানুপাতিক হারে বাড়তে থাকে পরিজনদের নির্মমতা। ১৯৯৫ সালে এক গবেষণায় জানা গিয়েছিল, পরিবারে মহিলারা পুরুষের তুুুুুলনায় অনেক বেশি  নিষ্ঠুরতা পান নিজেরই পুত্র, পুুত্রবধূ এবং  পরবর্তী প্রজন্মের কাছ থেকে।  মানসিক যন্ত্রণা তো আছেই এর সঙ্গে বাদ     পড়ে না শারীরিক নিগ্রহও। 


 বয়স হলে মনের অবস্থা কেমন থাকে?


             আমরা কি কখনো খোঁজ নিই তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যর দিকে। তাঁদের মন কি বলে, তাঁরা কি ভাবছে জিজ্ঞাসা করি কখনো আমরা! 

            একটা  সময়ের পর বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের একটা ভয় মনের মধ্যে কাজ করে। তাঁরা ভাবে-- যদি বাড়ির থেকে আমাকে এরা বার করে দেয়,  যদি আমার সম্পত্তি আত্মসাৎ করে নেয়, বা আমাকে যদি ঠিক মতো খেতে না দেয়, আমি অসুস্থ হলে যদি চিকিৎসা না করাই ইত্যাদি ইত্যাদি ভয় এই বয়সে মনের মধ্যে কাজ করে। এবং যার ফলে নিজের আত্মরক্ষার জন্য অনেক এমন কথা বলে ফেলে যেগুলো আমাদের গায়ে তীরের মত বাঁধে। এবং আমরা তাঁদের বয়সের দিকে লক্ষ্য না রেখেই তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ফেলি। আর মুখে বলি এতো বয়স হল, কদিন পরেই গত হবেন তবুও ঠিক ঠাক কথা বলতে আজও শেখেনি--- ইত্যাদি ইত্যাদি।

            কিন্তু তথ্য বলছে তাঁদের বয়স হয়েছে বলেই তাঁরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে এবং বাড়তি কথা বলে ফেলছে। আসলে বয়স্ক মানুষ আর বাচ্চা মানুষদের সমতুল্য ধরা উচিত। কিন্তু আমরা সেটা করি না বলেই সমস্যা জটিল আকার ধারণ করে।

           তথ্য বলছে-- যত মানুষ বৃদ্ধ হতে থাকবে তত সে সবার প্রতি বেশি অভিযোগ করতে থাকবে। এটি সব থেকে বেশি দেখা যায় যাঁদের বয়স - ষাট সত্তরের ঘরে তাঁদের মধ্যে। এর কারণ হল- তাঁদের শরীর দিন দিন  দুর্বল হয়ে আসে, তাঁদের পা দুটো সব থেকে আগে দুর্বল হয় এবং মন সেটা  মেনে নিতে চাই না, তাদের চলা ফেরাতে বিঘ্ন ঘটে  ফলে তাাঁরা একটু খিটখিটে হয়ে পড়ে। এক কথা বার বার বলে এবং ভাবে এই সংসারে আমার আর কোনও মূল্য নেই। 

            এই ভাবনার পিছনে আমাদের ও অবদান কিছু কম নয়। আমরা তাঁদের কথা সত্যিই আর গুরুত্ব দিতে চাই না। কোন কাজ করার আগে পরামর্শ নিই না। যাঁর ফলে তাঁরা মনে মনে কষ্ট পায়। এই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায় আমরা যদি তাঁদের বয়সের দিকে লক্ষ্য রেখে তাঁদের একটু বেশি যত্ন করি গুরুত্ব দিই তাহলেই।

          বর্তমানে সারা পৃথিবীতে প্রায় ৮২ কোটি মানুষ বয়স্ক।  ২০৫০ সালে ওটা দাাঁড়াবে ২ কোটি। একবার কি আমরা ভাবি এই দু কোটির মধ্যে কিন্তু আমরাও থাকব!  জন গণনার তথ্য বলছে,  পশ্চিমবঙ্গে প্রায় সাড়ে ৭৯ লক্ষ বৃদ্ধা- বৃদ্ধাদের বাস।  যার মধ্য  ৫৬ . ৮ শতাংশ বৃদ্ধ ৫৯.৮ শতাংশ বৃদ্ধা একা থাকেন।আর ষাটোত্তীর্ণ  বৃদ্ধ- বৃদ্ধাদের সংখ্যাার দিক দিয়ে কলকাতা হল দেশের মধ্যে দ্বিতীয় শহর। প্রথমে আছে ব্যাঙ্গালোর। 

 
              একটা সময়ে ভারতীয় ঐতিহ্যে অনুযায়ী পরিবারের বয়স্ক মানুষ জন পরিবারের কাছ থেকেই সুরক্ষা, যত্ন ও সম্মান পেতেন শেষ দিন পর্যন্ত।তখন ছিল যৌথ পরিবার এখন নিউক্লিয়ার পরিবার।সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে চিরাচরিত মূল্যবোধ, নীতিবোধ।এখন বাবা মায়ের থেকে নিজেদের কেরিয়ার কে সকলেই বেশি প্রাধান্য দিতে পাড়ি দিচ্ছে বিদেশ। বাবা মার ঠাঁই হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে। সামর্থ না থাকলে থাকতে হচ্ছে একা। অথচ সকলেই সন্তান বড় করে শেষ জীবনে তাঁদের স্নেহের সান্নিধ্যে পাওয়া আশায়।  

          কিংবা কাছে থাকলেও বাবা মা কে যত্ন করে কজন? কত বাবা মাকে যত্ন তো দূরে থাক অর্থ এবং সম্পত্তির জন্য নির্লজ্জের মতো খুন পর্যন্ত করতে পিছপা হচ্ছে না।  বয়স্ক মানুষেরা শারীরিক দুর্বলতা, অসুস্থতা, উপার্জনহীনতা, পরিবারের অবহেলা সহ্য করতে না পেরে তাঁরা একটা দিশাহীন, নেতিবাচক, দুঃখময় জগতে ঢুকে যান।মনে রাখতে হবে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে বয়স্ক মানুষের আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েই চলছে।শুধুমাত্র মানুষের দুর্ব্যবহার, অবহেলা, মানসিক বন্ধন কেটে দেওয়া, তাঁদের বাঁচার ইচ্ছা টাকেই শেষ করে দেয়।

         এই তো কয়েক বছর আগের ঘটনা।বারাসতের একটা ফ্ল্যাটের মধ্যে একজন বৃদ্ধ তাঁর স্ত্রী কে নিজের হাতে খুন করেছিল এবং নিজের গলায়ও  ছুড়ি বসিয়েছিল। তখন ও বৃদ্ধ মানুষ টা জীবিত আছে, যখন তাঁকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, আপনি কেন এটা করলেন?

           বৃদ্ধের উত্তরে প্রশ্ন কর্তার চোখজোড়া বিস্ফারিত হয়ে গিয়েছিল,  যে উত্তর তিনি দিয়েছিলেন তা শুধু তাঁর মনের কথা নয়; আজকের দিনের জীবন্ত দলিল।তিনি বলেছিলেন- ওকে আমি মেরে নিজে শেষ হতে চেয়েছি কারণ আমি মরে গেলে ওকে দেখবে কে! কখন আসে মনের মধ্যে এতোটা অবসাদ,  জীবন নিয়ে এতোটা অনিশ্চয়তা!! বাবা মা যখন এমন কোন সিদ্ধান্ত নেন তখন আমাদের লজ্জা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়!! 

         সব ধর্মের কিন্তু মূল কথা হল-- পিতা মাতা আমাদের আর এক জীবন। তাঁদের কোন মতেই অবহেলা করা যাবে না। 

 হজরত মুহাম্মদ (স) বলেছেন----

 "মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেশত"

  হিন্দু শাস্ত্রে -- মায়ের স্থান উল্লেখ করে বলেছেন---

   "জননী এবং জন্মভূমি স্বর্গের চেয়েেও শ্রেষ্ঠ "

 বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ   ত্রিপিটকে আছে---

   "মাতা পিতার সেবা করাই সবচেয়ে উত্তম "

                  কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা জানি সব মানি না কিছুই।

         আসুন এবার জানি বাবা মায়ের প্রতি সন্তানের কর্তব্য কেমন হওয়া উচিত:


       #1. মানসিক যত্ন নিন:


                                       খ্যাতনামা সমাজতত্ববিদ অধ্যাপক ড: অভিজিৎ মিত্র কথায়----- "বয়স্ক মানুষ কে মানসিকভাবে ভালো রাখাটা খুুুব জরুরী। অল্প বয়সিদের সান্নিধ্য তাঁদের মানসিকভাবে চাঙ্গা করে তোলে, তাঁরা চাই সজীব প্রাণের স্পর্শ।" 

            তাই শত কাজ থাকলেও সময় দিতে হবে বাবা মা কে। তাঁদের গুরুত্ব আমাদের কাছে অপরিসীম এটা বোঝাতে হবে। আমাদের যেমন ছোটবেলায় বাবা মা আদর করত ঠিক সেই আদর টা এখন আমাদের তাঁদেরকে করতে হবে।  তাঁরা যেন মনের মধ্যে আমাদের কোন ব্যবহারে দুঃখ না পায়, আঘাত না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 

 

         #2.  শরীরের যত্ন নিতে হবে, খোঁজ নিতে হবে:


          মাঝে মাঝে হাত পায়ের নোখ কেটে দিতে হবে। তাঁদের জামাা কাপড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে দিতে হবে।  তাঁদের খোঁজ নিতে হবে প্রতিটি দিন। তাঁদের কি প্রয়োজন সেটা  জানতে হবে। 

              আমাদের সমাজে বয়স্কদের আরও তাড়াতাড়ি বয়স্ক হতে এগিয়ে দেয়-- এটা ছেড়ে দাও, ওটা বাদ দাও। মানুষ তো মৃত্যুর দিকে হেঁটে যায় সব ছাড়তে ছাড়তে-- তাঁর শক্তি, সামর্থ্য, চেহারা, লাবণ্য। তাঁর সঙ্গে পরিজনদের দেওয়া অদ্ভুত দাওয়াই তাকে সময়ের আগেই বৃদ্ধ বানিয়ে দেয়।

         পোশাকের রং সরিয়ে দাও, বিনোদনের আয়োজন মুছে দাও, বয়স হয়েছে বেশি খেও না, ওখানে যেও না এখানে যেও না। উপহার দাও রং হীন বস্ত্র, ইত্যাদি আরও কত কি। তাঁর যে বয়স হয়েছে এটা আমরা সব সময় মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগে পড়ি। এগুলো আমাদের বন্ধ করতে হবে। তাঁদের মনের ইচ্ছার কথা জানতে হবে। 

        কোন মানুষ ই চাই না রং হীন জীবন যাপন করতে। আমরা এগুলো চাপিয়ে দিয়ে তাঁদের মনের আনন্দ কেড়ে নিই।  তাই এদিকে নজর রাখতে হবে।


      #3. বাবা মায়ের জন্মদিন ঘটা করে পালন করুন:


          কিছুদিন আগে আমার শ্বশুর মশাইয়ের আঁশি তম জন্মদিন খুব ঘটা করে পালন করা হয়েছে। ভাবতে পারবেন না, এই দিনটিতে তাঁর আনন্দের সীমা কোথায় গিয়ে পৌঁছায়।  

         এবারের একটি মজার বিষয় উল্লেখ করি-- আমার শ্বশুর মশাইয়ের বৌদি আছেন, তিনিও বয়স্ক। তো জেঠিমা যখন বাবা কে আর্শীবাদ করছেন তখন বাবা তাঁকে বলছেন,  বৌ দি আমার গায়ে, মাথায় একটু প্রদীপের তাপ দেবে না। 

       বাবার কথা শুনে ঘরের সকলেই হো হো করে হেসে উঠেছে। বাবা তখনও একটা বাচ্চার মতো সকলের দিকে তাকিয়ে আছে। 

          এটাই হল বেঁচে থাকার আনন্দ,  এটাই তো শান্তি এটাই খুশি।  এ এক পরম সুখ সকলে মিলে আনন্দে থাকা। জীবনের সত্যিই কি কোন মানে আছে একা একা স্বার্থপরের মতো বাঁচার। তাই বাড়ির বয়স্ক আদরের বাবা মা কে এই আনন্দ টা উপহার দিন। 

সন্তানের কর্তব্য
                   বাবা মা কে একটু খুুশি দেওয়া 
                       চিত্র সূত্র- pixabay.com 


         #4. সময় দিন কথা বলুন:


               কথা বলুন বাবা মায়ের সঙ্গে,  তাঁদের কিছুটা সময় দিন। গল্প করুন,  ছোট বেলার স্মৃতি সম্পর্কে জানতে চান। এগুলো বলতে খুব আনন্দ পায়। এতে তাঁদের স্মৃতি শক্তি ও ভাল থাকে।  


        #5.কিছু হাত খরচ দিন:


           বাবা মায়ের কিন্তু খুব ইচ্ছা করে নাতি নাতনিদের কে কিছু উপহার দিতে এতে তাঁরা শান্তি পায়। এবং কাছে টাকা থাকলে মন ও খুব ভালো থাকে। 

         তাই মাঝে মাঝে কিছু হাত খরচ দিন বাবা মা কে, তাঁরা যেমন আমাদের ছোট বেলায় দিত ঠিক তেমন।

       #6.ঘুরতে নিয়ে যাওয়া উচিত:


           সারা জীবন পরিবার, সংসার, ছেলে মেয়ের ভবিষ্যত এই নিয়ে ভাবতে ভাবতে তাঁদের আর ঘুরতে যাওয়া হয় না। 

             তাই আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী ঘুরতে নিয়ে যান। বাইরে খেতে গেলে বাবা মা কে অবশ্যই সঙ্গে নিন। মনে রাখবেন তাঁরা যতদিন বেঁচে ছে আর কিন্তু ততদিন বাঁচবে না তাই তাঁদের ভালো রাখা ,শেষ জীবনে একটু শান্তি দেওয়া আমাদের কর্তব্য। 

           কিছুদিন আগে ফেসবুকে একটা ছেলের পোস্ট দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। সেটা ভাইরাল ও হয়েছে। সে জানিয়েছে--- 

   ' মা আমাকে পৃথিবী দেখিয়েছে, আমি মাকে পৃথিবী ঘুরিয়ে দেখাবো।' 

         সত্যিই দারুণ সুন্দর মনোভাব। 

        #7. অর্থিক নিরাপত্তা দেওয়া:


            হয়তো বাবা মা আমাদের ততটা বিলাসিতা পূর্ণ জীবন আমাদের দিতে পারি নি। কিন্তু আমরা চেষ্টা করলে তাঁদের একটা সুন্দর পরিবেশ দিতে পারি। যেখানে তাঁরা শাান্তি তে ঘুুুুমাতে পারবে, নিশ্চিন্তে জীবন যাপন করতে পারবে। 


             #8.সুস্থ পরিবেশ দিন:


               তাঁদের শেষের দিন গুুলো যেন আমাদের নিয়ে চিন্তা না করে কাটে সেটা দেখবেন। আমরা যদি সংসার জীবনে সুখী থাকি, যদি হাসি খুশি থাকি তাহলে বাাবা মা সব থেকে বেশি আনন্দ পায়। এতে পরিবেশ ও সুন্দর সুস্থ থাকে। 

      বাড়িতে অশান্তি হলে বাচ্চা আর বয়স্ক মানুষ গুলো বেশি কষ্ট পায়। 

         

          #9.তাঁদের প্রয়োজনীয় জিনিস আগে আনবেন:


            ওষুধ থেকে শুরু করে খাবার দাবার তাঁদের হাতের কাছে রাখা দরকার। তাদের কোন কিছু খেতে ইচ্ছে হচ্ছে কি না  জানা দরকার। 

         অনেক সময় মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেন না তাঁরা। আমাদের আলতো করে বুঝে নিতে হবে তাঁদের মনের কথা। 


        #10. ভালোবাসা দিন:


              সময় করে বয়স্ক বাবা মায়ের কাছে বসে   তাঁদের আদর করুন । please এতে লজ্জা পাবেন না,  একদিন করেই দেখুন, তাঁদের চোখের কোন দিয়ে জল গড়িয়ে পড়বে। 

           সত্যি কথা বলতে,  আমি নিজেও আগে এই বিষয় গুলো জানতাম না। আমি এগুলো আমার husband কে দেখে দেখে শিখেছি। বাবা মা কে যে কতটা যত্ন করতে হয়, কতটা শ্রদ্ধা করতে হয়, কতটা ভালোবাসতে হয় সেটা ওকে না দেখলে জানা হতো না আমার । 

        খুব সুন্দর এই পৃথিবী টা, যদি আমরা সুন্দর করে ব্যবহার করতে জানি তবেই। আমাদের উচিত প্রতিটা সম্পর্ক কে যত্ন করা ভালোবাসা সম্মান করা, তবেই আমরা ভালো থাকব। আমরা সব কাজ হয়তো বাবা মায়ের ইচ্ছা মতো করতে পারি না, অনেক সিদ্ধান্ত তাঁদের মতের বিরুদ্ধে নিই,  তবে যাই করি না কেন তাঁদের কে আমরা সব সময় অজস্র ভালবাসা দিয়ে ভরিয়ে রাখব। মনে রাখতে হবে তাঁদের জন্যই আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীটা দেখার সৌভাগ্য লাভ করেছি। 


ধন্যবাদ।

চিত্র সূত্র- pixabay.com 

তথ্যসূত্র- টাইমস অব ইন্ডিয়া,  বর্তমান পত্রিকা,  আনন্দবাজার পত্রিকা এবং নিজস্ব মতামত।

TAGS, বৃদ্ধ বয়সে বাবা মায়ের যত্ন, সম্পর্ক, সন্তান ও বাবা মা।

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.