পরকীয়া প্রেম বা বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক

 পরকীয়া প্রেম বা বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক:


          বর্তমানে পরকীয়া বহুল প্রচলিত একটি শব্দ।আমরা প্রতিদিন সংবাদ মাধ্যম এবং বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলের দৌলতে পরকীয়া প্রেমের বা বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কের অজস্র দৃশ্য দেখতে পায়। পৃথিবীর সমস্ত ধর্মই পরকীয়া কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

        এখন প্রশ্ন হচ্ছে পরকীয়া কি বা কাকে বলে?

        কোন বিবাহিত নারী বা অবিবাহিত নারী যদি বিবাহিত কোন পুরুষের সঙ্গে গোপনে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে বা কোন বিবাহিত পুরুষ যদি অবিবাহিত বা বিবাহিত  কিংবা বিধবা নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় তখন তাকে পরকীয়া বলে। 

         
পরকীয়া প্রেম
                বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক 
                      চিত্র সূত্র- pixabay.com 

 
         বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক মানেই পরকীয়া বা ব্যভিচার শব্দে চিহ্নিত হয়। আমরা আজকে জানব পরকীয়া প্রেম বা সম্পর্ক কখন তৈরি হয়, কেন তৈরি হয় এবং এর ভাল ও মন্দ সম্পর্কে কিছু কথা। তার আগে ২০১৮ সালে ভারতীয় বিচারব্যবস্থা পরকীয়া বিষয়ে কি রায় ঘোষণা করেছে সে সম্পর্কে  আলোকপাত করব--- 

           ২০১৮ সালে বিচারপতি দীপক মিশ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন বেঞ্চ ১৫৮ বছরের পুরনো ভারতীয় দণ্ডবিধি কে খণ্ডন করে পরকীয়া কোন ফৌজদারী অপরাধ নয় বলে ঘোষণা করেন। 

             বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী একটি অপরাধ  এবং যে পুরুষ  এ ধরনের  সম্পর্কে যুক্ত থাকবে ও তাঁর অপরাধ আদালতে প্রমাণিত হলে এতোদিন তাঁর সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেটা আর নেই। ২০১৮ সালের রায় অনুযায়ী এতে একটি নারীর অসম্মান করা হয়, এবং নারী  কে একটি পুরুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ধরা হয়। তাই ১৫৮ বছরের ইংরেজদের  তৈরি পুরানো  রায় পরিবর্তন করা  হয়। 

       আগের রায়ের ফলে কেবল পুরুষ সাজা পেত, নারী নয়। কিন্তু কোন নারীর ইন্ধন ছাড়া কোন পুরুষ সহজে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে পারে না। (ধর্ষণ ছাড়া)। যদিও আদালত নারীর দিক বিবেচনা করে এই রায় দিয়েছে। যাইহোক।

            এই রায় নিয়ে বিভিন্ন মহল বিভিন্ন মতামত প্রদান করেছেন। যেমন কলকাতা ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল  সায়েন্সের অধ্যাপিকা রুচিরা গোস্বামীর মতে-- 

        "যদি একটা বৈবাহিক সম্পর্কে কোন সমস্যা তৈরি হয় এবং সেখান থেকে কোন এক পক্ষ স্বামী বা স্ত্রী বিবাহের বাইরে গিয়ে কোন সম্পর্ক তৈরি করেন, সেটাকে যুক্তি হিসাবে দেখিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ হতেই পারে-- কিন্তু সেটা কে অপরাধ হিসাবে এতোদিন কেন যে গণ্য করা হত, তার কোন কারণ আমি তো খুঁজে পায় নি।"

        উপরে উল্লিখিত বাক্য গুলি আর একবার ভাল করে পড়ুন--- এখানে বলা হয়েছে যদি কোন সম্পর্কের মধ্যে মতানৈক্য তৈরি হয়, বা একে অপরের সঙ্গে যদি বসবাস না করা যায় তাহলে সে সম্পর্কের ইতি ঘটিয়ে অন্য  সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার মধ্যে কোন অপরাধ নেই, এটাই বোঝানো হয়েছে। 


            এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত লেখক স্যার প্রবীর ঘোষের- মনের নিয়ন্ত্রণ যোগ- মেডিটেশন গ্রন্থ থেকে একটি অংশ উল্লেখ করব--- 

         এক গৃহবধূ। বয়স ৩০। বরের বয়স প্রায় চল্লিশ। বিয়ে হয়েছে বছর আটেক। চার বছর আগে মেয়ে টি একটি মৃত সন্তানের জন্ম দেন। তার পর থেকে তাঁর মনে হয় মৃত সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য তাঁর স্বামী তাঁর কাছ থেকে একটু একটু করে সরে যাচ্ছে। সেই সময় তাঁর পাশে বন্ধুর মতো দাঁড়ায় পাঁচ বছরের ছোট দেওর।  ধীরে ধীরে দু'জনের মধ্যে একটা শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবারে এই তিন জনের বাইরে আছেন শাশুড়ি। বর ও শাশুড়ি দু'জনেই বউদি দেওরের শারীরিক সম্পর্কের কথা জানেন। গৃহবধূ টি জানেন,  পরিবারের কারও কাছে বিষয়টি গোপন নেই।  এই চিন্তায় বধূটিকে অপরাধ বোধে তাড়া করছে। বর ও দেওর দুজনের সঙ্গেই শারীরিক সম্পর্ক রাখার কারণে নিজের উপরে ঘেন্না হচ্ছে।

         স্যারের মতে, একজনের সঙ্গে মানসিক দূরত্ব বাড়লে সেই ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে আর এক জনের প্রবেশ ঘটার মধ্যে  অনৈতিক  কোনও ব্যাপার নেই। কিন্তু একই সঙ্গে দেওর ও বর কে বিছানায় তোলাটা অবশ্যই অনৈতিক। 


         দুজনের সঙ্গে এক সঙ্গে  শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখলে অপরাধবোধ আসতেই পারে। অথবা ভবিষ্যতে আপনি আরও বড় রকমের বহুগামী জীবনে ঢুকে পড়তে পারেন। যার আর এক নাম 'লাম্পট্য'। 


            এই মন্তব্যের সঙ্গে আমি সহমত পোষণ করি। কিন্তু তার ও অনেক ভাগ আছে। অনেক বিষয় গভীর ভাবে ভাবার আছে। আপনি একটা সম্পর্কের থেকে বেরিয়ে এসে যে সম্পর্কের মধ্যে লিপ্ত হচ্ছেন সেই সম্পর্ক টা কতটা মজবুত! তার উপরে কতটা ভরসা করা যায়? আপনার সিদ্ধান্ত ঠিক তো? এমন হাজার ও প্রশ্নের সম্মুখে নিজেকে দাড় করাতে হবে। আবেগ যেন আপনার সঙ্গে খেলা না করে সেই  দায় নিজেকে নিতে হবে। 

             এছাড়া আপনার শারীরিক সুখের বলি অন্য কেউ হচ্ছে কি না তার খোঁজ নিতে হবে। পরকীয়া সম্পর্কে জরিয়ে পড়া মানেই পাশের মানুষ টার বিশ্বাস ভঙ্গ করা। যে বা যারা এমন সমস্যার সম্মুখীন হয়, তাঁদের উচিত তাঁর সঙ্গীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে একটি রাস্তা অনুসরণ করা। কারণ দু নৌকায় পা দিয়ে চললে বিপদ অনিবার্য। এমন উদাসীন ভাবে জীবন পরিচালনা করলে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়বে।পাশের মানুষ টিকে শত্রু মনে হবে। কিন্তু একটা সময় তাঁর সঙ্গে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে সংসার শুরু করেছিলেন। তাই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ভেবে চিন্তে। 

   
পরকীয়া প্রেম
                       সম্পর্কের টানাপোড়েন 
                      চিত্র সূত্র- pixabay.com 


     কিছুদিন আগে সোস্যাল মিডিয়ায়  একটি খবর প্রকাশিত হয়, অবশ্য এমন অনেক খবর লোকচক্ষুর আড়ালে থাকে তার কোন হিসাব নেই। যাইহোক,  সেখানে দেখা যায়-- একটি স্ত্রী তাঁর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে নিজের স্বামী কে রাতে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছে।  কিন্তু তাঁর স্বামী অত্যন্ত ভাল মানুষ। 

      পরকীয়া সম্পর্কে যদি কোন সাজা বা বিচার না থাকে তাহলে এমন ঘটনা কত যে ঘটবে তার কোন ইয়ত্তা নেই।  যেটুকু এখনো ভয় ডর আছে সেটা হল আইন। অবশ্য এ ঘটনায় সাজা হবে কি হবে না তা বিচারাধীন। কারণ আইন প্রমাণ চাই। এখানে কোন প্রমাণ নেই। 

          যদি কারও সঙ্গে সম্পর্ক রাখা না যায়, বা বৈবাহিক সম্পর্ক ভাল না লাগে তাহলে তাঁকে পৃথিবীর বুক থেকে সরিয়ে দেওয়ার মতো অপরাধ করতে হাত কাঁপছে না। এটা তো একটা অসুখ বলা যায়। 


         সর্বোপরি হচ্ছে মানসিকতা যেন নীচে না নামে তার দায়িত্ব নিজের। প্রচুর মানুষ আছে যাঁরা লোভে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়।  হয়তো তাঁর সঙ্গী ঠিক মতো দেখভাল করতে পারে না বা তাঁর সব চাহিদা পূরণ করতে পারে না তখন সেখানে তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ ঘটে। এতে তাঁর পরিবার যে কতটা কষ্ট পায় সে হুঁশ জ্ঞান মানুষ বিসর্জন দিয়েছে। 

      কিছুদিন আগে এমনই একটি ঘটনা কোরা তে একটি আর্টিকেল এ পড়লাম এক কোরা মিত্রের লেখায়। তিনি পরকীয়া নিজের চোখে দেখেছেন কিনা তার উত্তরে আর্টিকেল টি লেখেন। যার সারমর্ম হল---

            তাঁর এক বান্ধবী ছিলেন, যে পড়াশোনায় অত্যন্ত ভাল। এবং সঙ্গে নাচ গান,  আবৃত্তি ও করতেন। তো লেখক লক্ষ্য করেন যে তাঁর বান্ধবী দিন দিন পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে পড়ছেন। তাঁর মন সব সময় উদাসীন থাকে। লেখক তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে মেয়ে টি কোন কিছু স্বীকার করে না বা কিছু বলতে চায় না এড়িয়ে যায়। তো এভাবেই চলছে। 

         একদিন লেখক ঐ মেয়েটির বাড়িতে তাঁদের একটা স্কুলে  অনুষ্ঠান ছিল তার প্রস্তুতির জন্য গেছে। ওদের সঙ্গে মেয়েটির একটি ছোট ভাইও আছে। তিন জনে বসে গানের সুর তুলছে। এমন সময় একটি মধ্যবয়স্ক লোক এসে ওদের দড়জা নাড়া দিচ্ছে,  দড়জা খুলতে বলছে। কিন্তু মেয়েটি কিছুতেই দড়জা খুলবে না। সে বলছে বাবা বাড়িতে নেই, মা ঘুমাছে আপনি এখন জান। কিন্তু সেই লোক তো কিছুতেই যাবে না। মেয়ে টি আর লোকটির সঙ্গে দুই এক কথা হতে হতে জোর তর্ক শুরু হয়ে গেছে। 


          এমন সময় সেই লোকটি প্রচণ্ড রেগে গিয়ে বলছে-- এই তোর মা যখন আমার কাছ থেকে ফ্রিজ নেয়,  দামি দামি গহনা নেয়, দামি পোশাক নেয় তখন তোদের লজ্জা করে না। তুই এখন যে আমাকে বড়ো  ঢুকতে দিচ্ছিস না! এই কথা শুনে মেয়ে টি ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে এবং তাঁর চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে-- সে তখন চিৎকার করে বলে উঠেছে-- আমার মা যেমন জিনিস নিয়েছে তার দাম গতর দিয়ে মানে শরীর দিয়ে পরিশোধ করেছে। তুই এখন এখান থেকে দূর হয়।

        লেখকের কথায়,  মেয়ে টিকে তখন দেখে মনে হচ্ছিল-- সে যেন  মা দূর্গার রূপ ধারণ করেছে।  কতটা অপমানিত বোধ করার পরে এমন কথা একটি ছোট্ট মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে সেটা ভাবুন। ও কখনো কি ওর মা কে জীবনে ক্ষমা করতে পারবে!! 

             তাঁর মা শরীরের বিনিময়ে জিনিস নেয়, এটাই তাঁর ছোট্ট মনটা কুঁড়ে কুঁড়ে খেত। 


       তাই নিজের সাময়িক সুখ যেন অন্যের জীবনে অভিশাপ না ডেকে আনে সেটা লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। তবে একদম ই যদি বিবাহিত সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে সে সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে আসাই উচিত। এতে কোন পাপ বোধ  মনে কাজ করবে না। তার পর দেখে শুনে আপনি পরবর্তী সম্পর্কে জাড়ান। আর যদি একটা সম্পর্ক থাকা কালীন অন্য সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়েন সেক্ষেত্রে কোন নোংরামো না করে আগের সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ। 

      আমরা যখন এক সঙ্গে একাধিক সম্পর্কে যুক্ত হই তখন আমাদের মনের স্থিরতা নষ্ট হয়,  জীবনের কোন ছন্দ থাকে না। কারণ মন কখনোই এটা মেনে নেয় না। যাঁরা এটা করে তাঁরা মনের বিরুদ্ধে গিয়ে করে। ফলে তাঁদের মনে একটা সময়ের পর আর শান্তি থাকে না। হতাশা প্রবেশ করে। কাজের ক্ষতি হয়। সে কখনোই আর নিজের কাজে মন বসাতে পারে না। এবং এই কারণেই সব ধর্ম গ্রন্থ পরকীয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। খারাপ আক্ষা দেয়। যাতে আমাদের জীবন সুন্দর হয়। 
       এবার জানব, পরকীয়ায় মানুষ কেন লিপ্ত হয় বা কখন লিপ্ত হয়---- 

  গবেষণায় দেখা গেছে মানুষ পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পরে তার কারণ হল---

#1.  বাল্য বিবাহ:


                           খুব কম বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে অনেক সময় পার্টনারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তাঁদের মনে হয় এর কাছে নতুন কিছু আর পাওয়ার নেই।  ফলে পরবর্তীতে কোন মনের মতো কাউকে পেলে তাঁর প্রতি নতুন করে আকর্ষণ তৈরি হয়। 

 #2. জোর করে বিবাহ:


                                      এমন প্রচুর বিবাহ আছে যাঁদের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে বাড়ির লোকের পছন্দ অনুুযায়ী বিবাহ দেয়। এবং ভাবে একসঙ্গে  থাাকতে থাকতে টান তৈরি হয়ে যাবে।

       এমন সম্পর্কে টান তৈরি কতটা হয় সন্দেহ আছে। একে অপরের কাছ থেকে শারীরিক চাহিদা পূরণ করে নেয়, মনের মিল তেমন হয় না। পরে এরাই পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। ( যদিও সবাই না। সব কিছুতেই অবশ্যই ব্যতিক্রম আছে)। 


  #3. সন্তানের জন্ম:


                               একটি মেয়ের যখন সন্তান হয় তখন সে তাঁর  স্বামীর প্রতি আগের মতো লক্ষ্য রাখতে পারে না।  মায়ের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সে  ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অনেক স্বমী এটা মেনে  নেয়। কিন্তু অনেকেই মানতে পারে না। ফলে একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়।

         এক্ষেত্রে মেয়ে টির উচিত দু'দিকেই ব্যালেন্স করে চলা। নিজের শরীরের যত্ন নেওয়া। অনেকেই ভাবে বিয়ে হয়ে গেছে বাচ্চা হয়ে গেছে এখন আর এতো সুন্দর করে সেজে কি লাভ বা এতো কিছু দেখার কি প্রয়োজন। কিন্তু এটা ভিষণ বড় একটা ভুল।  এতে স্বামী অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে পারে আপনার প্রতি অনীহা হয়ে। যদিও আগেই বললাম সবাই সমান নয়। 


 #4. দাম্পত্য জীবনে অসন্তুষ্টি:


                                        সঙ্গী টি যদি শারীরিক চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে সেই সম্পর্কের মধ্যে তৃৃৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ ঘটে। 

            পরকীয়া সম্পর্ক বেশিরভাগ এই কারণে ঘটে। এখানে যদি একে অপরকে সময় দেওয়া যায়,  একটু ধৈর্য্য ধরা যায় তাহলে এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব হয়।


  #5. কেরিয়ারের অগ্রগতি:


                                     এখানেও লোভ উঁকি দেয়। নিজের কেরিয়ার কে উচ্চ স্থানে পৌঁছাতে অনেকেই কর্মক্ষেত্রে প্রলোভনে পড়ে।  এটা মারাত্মক একটি সমস্যা। 


  #6. বেশি আনন্দ পাওয়ার আশায়:


                     অনেকেই মনে করে তাঁর সঙ্গী তাঁকে ঠিক মতো শারীরিক তৃপ্তি দিচ্ছে পারছে না। সে অন্য সম্পর্কে লিপ্ত হলে আরও বেশি আনন্দ উপভোগ করতে পারবে বা চরম উত্তেজনা পাবে। এই আশায় পরকীয়া তে লিপ্ত হয়।

  #7. দায়বদ্ধতার বালাই নেই:


                                       অনেকেই আছে যারা শারীরিক সুখ চায়, কিন্তু কোন দায়িত্ব বহন করতে চায় না।  এই ধরনের মানুষ পরকীয়া সম্পর্ক কে পছন্দ করে।  

       কিন্তু এটা জেনে রাখা একান্ত প্রয়োজন যে,  একটা সময়ের পর আর এই শরীর সঙ্গ দেবে না। তখন কিন্তু পস্তাতে হবে। 

   #8. দূরত্ব:


                   এখন বেশিরভাগ মানুষই কর্মক্ষেত্রে দূূরে থাকে।   আর এই দূরত্বর সুযোগ নেয় কিছু মানুষ। 

       আশেপাশে একটু নজর করলে এমন ঘটনা হাজার ও চোখে পড়বে। 


                              উপসংহার 


         সর্বোপরি এটাই বলার, পরকীয়া সম্পর্ক খারাপ 
  বৈই ভাল হয় না। একটু খানি আনন্দের জন্য তার দাম চোকাতে হবে সারাজীবন। একটা সময়ের পরে আর যৌবন থাকবে না। তখন নিজের চোখে চোখ রাখাই মুশকিল হয়ে পড়বে। মনের মধ্যে একটা অপরাধ বোধ জেগে উঠবে। আর একবার পা ফসকে গেলে তার বদনাম সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে। কখনো কারো কাছে মাথা তুলে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না। 

       সর্বোপরি যে মানুষের সঙ্গে থাকবেন সে কখনোই আর মন থেকে আপনাকে ভাল বাসতে পারবে না। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা,  সম্মান , মায়া তার থাকবে না। 

     তাই পরকীয়া তে লিপ্ত  হওয়ার আগে এগুলো কথায় রাখা উচিত। আর একান্তই  যদি সম্পর্কে  থাকতে ইচ্ছে না করে বা নতুন কোন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তাহলে  সেক্ষেত্রে  আগে ভাল ভাবে ভেবে তারপর সম্পর্কের  থেকে বেরিয়ে এসে নতুন সম্পর্কে  প্রবেশ করুন।  তাতে আপনার নিজের কাছে নিজের ছোট লাগবে না। 


               যদিও কোন সম্পর্ক ই সহজে নষ্ট করা উচিত নয়। 

ধন্যবাদ।

চিত্র সূত্র- pixabay.com 

তথ্যসূত্র সংগৃহীত এবং নিজস্ব মতামত।

TAGS,  extramarital affairs lifestyle, sex and reproduction.

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.