ভাল থাকার অভ্যাস

ভাল থাকার অভ্যাস:



     ভাল থাকতে গেলে কি করতে হবে?


             নিজেকে যদি কেউ সুন্দর করে গড়ে তুলতে  চাই, বড় হতে দেখতে চাই,  জীবনে বিশাল একটা পরিবর্তন আনতে চাই তাহলে তাঁকে বিশেষ কিছু নয় শুধুমাত্র নিজের বর্তমান অভ্যাস গুলোর দিকে তাকাতে হবে এবং কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।

           জীবন পরিবর্তনের মূল চাবিকাঠি হল অভ্যাস। সঙ্গে যুক্ত করতে হবে স্টং মাইন্ড সেট এবং ধারাবাহিকতা।  তুমি কি চাইছো? কোথায় পৌঁছাতে চাইছো? কিভাবে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব, কি কি পদক্ষেপ নিতে হবে, কি কি জীবন থেকে ত্যাগ করতে হবে, কি কি ফেস করতে হবে এই সমস্ত বিষয়ে স্পষ্টতা থাকা খুব প্রয়োজন---

        যখন আমার জীবনের উদ্দেশ্য স্পষ্ট থাকবে তখন সেটা পাওয়াও সহজ হবে, সহজের অর্থ কিন্ত চাইলেই পেয়ে গেলাম তা কিন্ত নয়, ভাল কিছু, বড় কিছু পেতে সময়, ধৈর্য, নিয়মবর্তীতা এগুলোর প্রয়োজন।

       কষ্ট না করলে কেষ্ট কখনও মেলে না এটা প্রাচীন প্রবাদ,  তাই পরিশ্রমের বিকল্প কিছু নেই। কিন্ত গাধার মত চোখ বন্ধ করে পরিশ্রম করে গেলে হবে না, তোমার পরিশ্রম সঠিক রাস্তায় হাটছে কিনা জানা ভীষণ দরকার।  আমরা যত ভাল প্লানিং করতে পারব , যত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করব তত সুন্দর ভাবে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাব।

        তবে আমাদের প্রথম মনোযোগ দেওয়া উচিত কিছু অভ্যাস পরিবর্তনের দিকে। ঐ যেমন সূর্য উঠার আগে নিজে ঘুম থেকে ওটা, নিয়ম করে শরীর চর্চা করা, ধ্যান করা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, জ্ঞান সংগ্রহ করা, বই পড়া, সমমানসিকতার মানুষের সঙ্গে মেশা,  এগুলো আগে আয়ত্ব করতে হবে।

       কত মানুষ অজুহাত দেয়, তাদের হাতে সময় খুব কম তাই বই পড়তে পারে না, কিন্ত মজার বিষয় হল এই পৃথিবীর সব মানুষের হাতেই চব্বিশ ঘণ্টা ই সময় থাকে, কেউ এক মিনিট ও বেশি সময় পায় না----

        ধরে নিলাম আপনি চাকরি করেন, সেখানে আট ঘন্টা ডিউটি করতে হয়, আট ঘন্টা আপনি ঘুমান,  ধরলাম দুই ঘন্টা যাতায়াতে সময় যায়, দুই ঘন্টা খাওয়া, ও স্নান ।
এখন ও হাতে আছে চার ঘন্টা, এর থেকে দুই ঘন্টা মোবাইল এ চলে যায়, এটাও মানলাম,  তবুও হাতে থাকে দুই ঘন্টা ---, প্রতিদিন এই দুই ঘন্টা যদি কেউ বই পড়ে তাহলে বিশ্বাস করুন আপনি আপনার কাজে সেরার সেরা হয়ে উঠবেন মাত্র তিন বছর ব্যয় করলেই----

      আর এই ধারাবাহিকতা যদি দশ বছর ধরে রাখতে পারেন,  আপনি এই পৃথিবীতে একটা বিশেষ অবদান রাখতে পারবেন আপনার কাজ দিয়েই।

      প্রথম প্রথম পড়তে একটুও ভাল লাগবে না, মন বারবার মোবাইল ফোনের দিকে ঝুঁকবে, কিন্ত নিজেকে বড় জায়গায় দেখতে চাইলে এই বদ অভ্যাস কে ত্যাগ করতে শিখতে হবে।
          আমার ও প্রথম প্রথম বই পড়তে একটুও ইচ্ছা করত না, আমার husband কে দেখে ভাবতাম ও কি করে এতোটা সময় স্টাডি করে -----

       ওর কোনও সোস্যাল প্লাটফর্ম এ একাউন্ট নেই,  কিন্ত অনলাইন এই বেশিরভাগ কাজ, বিজনেস টাই তো অনলাইন এ, তবুও কি সুন্দর সব কিছু এড়িয়ে নিজের লক্ষ্যের দিকে এক এবং অদ্বিতীয় ফোকাস রেখে চলতে পারে।

      ওর কাছ থেকে এই সুন্দর অভ্যাস টা এখন আমিও আয়ত্ব করতে শিখেছি,  সোস্যাল প্লাটফর্ম এ কাজের জন্য আসি, কারণ আমার কাজ টাই সোস্যাল প্লাটফর্ম এ। কিন্ত বাড়তি সময় নষ্ট করি না। বই পড়া এখন আমার সব থেকে পছন্দের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

       কত কিছু যে শেখা যায় বই থেকে এটা জানাই হত না যদি না বই এর জগতে প্রবেশ করতাম।  যদিও আমি সবে শিখতে শুরু করেছি, তাই জ্ঞান সামান্য ।

কিছুদিন আগেই "যুগনায়ক বিবেকানন্দ" তিনটি খন্ড শেষ করলাম।  এই তিনটি খন্ড বই সবাই কে অনুরোধ করব পড়ার জন্য,  কথা দিচ্ছি এই বই গুলো শেষ করার পর নিজের বর্তমান চিন্তা ভাবনা পুরো বদলে যাবে। বন্ধ চোখ খুলে যাবে। কোনদিন কাউকে হিংসা করতে মন চাইবে না, দেশের প্রতি , সাধারণ মানুষের প্রতি ভালবাসা বেড়ে যাবে, মনে হবে নিজেকে আরও সত তৈরি করতে, অহংকার মন থেকে মুছে যাবে, আমিত্ব ঘুচে যাবে, সমাজের জন্য কাজ করার ইচ্ছা বহু গুণ বেড়ে যাবে------

     এই পৃথিবী, প্রকৃতি, আকাশ,  বাতাস,  গাছ পালা, জল, বায়ু,  মাটি সব কিছুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ইচ্ছা করবে প্রতি মিনিট এ-----

    একটা ভালবাসা অনুভব করতে ইচ্ছা করবে প্রতিটি মানুষ এবং পৃথিবীর প্রতি।

   সত্যি বলছি জীবন বড় সুন্দর,  যদি তুমি সঠিক ভাবে বাঁচতে শেখো তবে-----------

আমি আগে কখনও ভাবিনি ভোর চার টাই উঠার কথা, মা খুব চাইতো আমি মিনিমাম সকাল সাত টার মধ্য উঠি, সেটাও পারতাম না। কিন্ত এই সাত বছরে অভ্যাস বদলে গেছে---

     আমার জীবনের সব পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে সুন্দর সুন্দর কিছু অভ্যাস পরিবর্তনের ফলে।

আমার মুখে ভিডিও তে যে হাসি টা দেখো, ওটা শুধু ভিডিও করার জন্য ই নয়, ঐ হাসিটা সব সময়ই আমার ঠোঁটে থাকে। কারণ আমি ভিতর থেকে সুখী মানুষ,  আমি আনন্দ খুঁজে নিতে শিখে গেছি, ভাল থাকা আয়ত্ব করতে শিখেছি, এগুলো একটাও বাইরের জিনিস নয়, এগুলো আমাদের মনের ভিতরেই থাকে, তোমাকে শুধু অনুভব করতে শিখতে হবে। একটা গাছের পাতা, আকাশের মেঘ দেখেও আনন্দে নাচতে ইচ্ছা করবে, তোমাকে সেই ইচ্ছা কে জাগাতে হবে---

      এর অর্থ কিন্ত মোটেও এটা নয়, জীবনে কঠিন সময় আসবে না, বা খারাপ কিছু ঘটবে না, আমরা যতক্ষণ বেঁচে থাকব ততক্ষণ অনেক কিছু জীবনে ঘটবে। তাই বলে সমস্যার মধ্য বসে পড়ে হাই হতাশ করলে চলবে না, ভাল করে সমস্যার দিকে তাকিয়ে দেখো ওর মধ্যেই কিছু না কিছু সমাধান আছে---

      আমাদের শুধু পজিটিভ থাকাটা অভ্যাস করতে হবে, তাহলেই সব সমস্যার সমাধান ওখানেই পেয়ে যাবে।

    পরিশেষে এটাই বলব, ভাল থাকতে শেখো, হাসা অভ্যাস করো, আনন্দ করতে শেখো ঐ যেমন ছোট বেলায় শিখে ছিলাম ABCD ঠিক তেমনই-----

     তবে হ্যাঁ মন ভাল রাখতে গেলে সম্পর্ক সুন্দর রাখাটা খুব জরুরী।  তাই জন্য ই আমি সব থেকে বেশি নজর দিই সম্পর্কের উপরে। কারণ আমার ভাল থাকার চাবিকাঠি এটাই কিন্ত------

     দুম করে কাছের মানুষটিকে কখনও খারাপ কথা বলতে নেই,  আঘাত দিয়ে কথা বলতে নেই,  তাঁকে গুরুত্ব দাও তাহলে দেখবে তুমিও তাঁর কাছ থেকে ততটাই গুরুত্ব পাচ্ছো-------

ভাল থেকো সবাই ❤️❤️


Tag : #motivation #healthylife #positive #rojinabanerjee 

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.