ভারতীয় সমাজে নারীদের অবস্থান
ভারতীয় সমাজে নারীদের অবস্থান:
নারীর বর্তমান অবস্থান মোটের উপরে এখন অনেক ভালো।অনন্ত সেই সতীদাহ প্রথার গনগনে আগুনের আঁচ তো নারীকে আর সইতে হয় না! ভারযীয় নারী এখন অনেক টা আধুনিক।এখন প্রায় প্রতিটি মেয়েই শিক্ষিত।নারী আজ নিজের একটা পরিচয় তৈরি করতে বদ্ধপরিকর।কর্মক্ষেত্রে নারীর ভূমিকা আগের থেকে অনেক উন্নত। কর্মব্যস্ত নারী
চিত্রসূত্র- pixabay.com
এখন কত মেয়ে কোন পুরুষ সঙ্গী ছাড়াই জীবন কাটাছে এবং সিঙ্গেল মায়ের ভূমিকাও পালন করছে। এর জন্য অবশ্য তাঁকে এই সমাজের সঙ্গে কম লড়াই করতে হচ্ছে না।
এখনো যতই নারী নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে থাক না কেন, এই সমাজের বিরূদ্ধে এক পা ফেললেই তাঁকে সমাজচূত ও হতে হচ্ছে। তাই নারী কে যতটা স্বাধীন ভাবা হয়, কিংবা মুখে বলা হয় ততটা কিন্তু নয়। একটু নারীর অন্তরের ভিতরে প্রবেশ করলে দেখা যাবে অনেক দগদগে ঘা নারীর বুকের মধ্যে জ্বলজ্বল করছে। কিন্তু এই ঘায়ের খোঁজ নেওয়ার মতো কেউ থাকে না।
শহরের নারী কে দেখে অনেকে ভেবে বসে, সে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, নিজের ইচ্ছেয় চলছে, নিজের মত প্রকাশ করতে পারছে তার মানে সে খুব ভাগ্যবতী একজন নারী। কিন্তু তাঁর মনে উঁকি দিলে দেখা যাবে অন্য চিত্র। তাঁকে কতটা লড়াই করে দিনযাপন করতে হয় সে গল্প শুধু সেই জানে।
তবুও সার্বিক বিচারে শহরের মেয়েদের অবস্থা অনেক উন্নত। কিন্তু দৃষ্টি টা একটু ঘুরিয়ে গ্রামের দিকে নিয়ে গেলে চোখের জল পড়তে বাধ্য হবে।এখানে অর্ধ শিক্ষিত অবস্থায় প্রচুর মেয়ের জীবন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছে।আজও কত নারীর স্বপ্ন মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে তার কোন হিসাব নেই। এখনো এই আধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে আজও নাবালিকা কন্যার বিবাহ হচ্ছে।তবে দিচ্ছে কে ? তাঁর পরিবার!
কিন্তু দিচ্ছে কেনো? দিচ্ছে তার কারণ নারী তো বোঝাস্বরূপ। শুনতে খারাপ লাগলেও কথাটা একশো শতাংশ সত্যি। এমন পরিবার কটা আছে যাঁরা নারীর বিবাহের আগে তাঁর কেরিয়ারের কথা ভাবে? বা তাঁর চোখে কেরিয়ার নিয়ে স্বপ্ন দেখায়? নারী কে বোঝাস্বরূপ শুধু গরিব পরিবার ই মনে করে না, অনেক শিক্ষিত, আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল পরিবার ও মেয়ের বিয়ে দিয়ে সমস্ত দায় থেকে মুক্তি পেতে চাই।
দূরবীন নিয়ে খুঁজলেও একশোই একটা এমন পরিবার মিলবে কি না সন্দেহ আছে যাঁরা তাঁর মেয়ের কেরিয়ার নিয়ে চিন্তা করে, বিবাহ নিয়ে নয়! সব মেয়েই বড় হয় একটা মিষ্টি সংসার জীবনের স্বপ্ন চোখে নিয়ে।
যুগে যুগে দেখা একই স্বপ্ন
মাত্র কয়েক যুগ আগেও নারী থাকত ঘোমটার আড়ালে । সংসারের চার দেওয়ালের মধ্যেই তাঁরা আবদ্ধ থাকত। স্বামী, সন্তান, সংসার এই ছিল তাঁদের মূূূল পরিচয়। তাঁরা সংসারের বাইরে আলাদা ভাবত না।আজকের জেট যুুগে জেট গতিতে এগিয়েে চলছে মেয়েরা। তবে গোপন একটি কথা শুুনে আপনি আবাক হবেন, মেয়েরা যত আধুনিক ই হোক না কেন,যতই প্রতিষ্ঠিত হোক না কেন তাঁরা সবাই বুকের অন্তস্তলে সংসারের স্বপ্ন টা যত্নে লালন করে রাখে।
এবং সংসার করতে ভীষণ আনন্দ পায়।সংসার যে একটা মেয়ের রক্তে মিশে থাকে।মাকে অনুকরণ করেই তো প্রতিটা মেয়ে বেড়ে ওঠে।
কিন্তু সমস্যাটা শুরু হয় এখানেই। মেয়েদের স্বপ্ন গুলো ইচ্ছেডানা হয়ে উড়ে বেড়ায় গোপনে মনের গভীরে । মেয়েরা স্বপ্ন দেখে একটা সুন্দর সংসার করার, একটুু সুখের ঘর করার। জীবনে যে প্রতিষ্ঠিত হবে, নিজের পায়ে দাাঁড়াবে সে স্বপ্ন নারীর মনে স্থান পায় অনেক পিছনের সারিতে।
এর ফলে কি হয়, সে একটা সুন্দর সংসার পায়, মনের মতো ঘর পায়, স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি মোটা কথা একটা ভরা সংসার। এই ভরা সংসারে নিজেকে কখন সে হারিয়ে ফেলে তার খবর সে নিজেই জানে না।যে মেয়ের কপাল ভালো সে সারাজীবন সংসার নিয়েই কাটিয়ে দেয়, নিজের ইচ্ছায়, তাঁর জীবন নিয়ে আর আক্ষেপ করার মতো কিছু থাকে না।
তবে যে মেয়ে এই সংসার জীবনে ঠকে যায়, নিজের অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি হয় তাঁর অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়? কিংবা এমন বহু মেয়ে আছে যারা মাঝপথে গিয়ে কোন দুর্ভাগ্যের শিকার হয় তখন তাঁর অবস্থাই বা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়!
তাছাড়া বহু নারী সংসার করে,কিন্তু মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে। এই ভয়টা হল নিজের অধিকার হারিয়ে ফেলার ভয়। নিজের মনের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব চলে, সে যে বেকার তাঁর যে এ সংসারে অবদান খুব সামান্য সেটা নিয়ে তাঁর মনের ভিতরে কষ্ট হয় তখনই সে নিজে যে এই সংসারে সর্বময়ী কর্তী এটা বোঝাতে থাকে এবং এই মনোভাবের কারণে শুরু হয় সংসারের মধ্যে অশান্তি।
এর মূল কারণ কিন্তু তাঁর নিজস্ব একটা কোন পরিচয় না থাকা।সে পরিবারের মধ্যে নিজের অস্তিত্ব কে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য নিজেকে জাহির করতে থাকে প্রতি মুহূর্তে। একদিন একটি গৃহবধূর সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল। তাঁর স্বামীর সঙ্গে তাঁর নিত্যদিন ঝকড়া লেগেই থাকে। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে সে খুব ঝকড়ুটে মহিলা। কিন্তু তাঁর মনের মধ্যে লুকিয়ে আছে অনেক যন্ত্রণা।
সে একটা সময় পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল, তাঁর নিজের কেরিয়ার তৈরি করার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু বাবার ইচ্ছার মর্যাদা দিতে গিয়ে পড়া শেষ হতে না হতেই পড়ল বিবাহ বন্ধনে। তবে মনের মধ্যে কষ্ট টা ঠিক রয়ে গেল। এখন তাঁর খুব আফসোস হয়, নিজের জীবন নিয়ে। যে পরিবার, সংসার নিয়ে সে মত্ত থাকে, মাঝে মাঝে তাঁর মনে হয় সেখানে তাঁর মূল্য শুধুই সবার দেখাশুনো আর লক্ষ্য রাখা পর্যন্ত। কারণ চুন থেকে পান খসলেই কেউ ছেড়ে কথা বলে না।
এখন সে যখন সব কিছুর প্রতিবাদ করতে যাই তখন সে ঝকড়ুটে বৌ এ পরিণত হয়। একদিন সে তাঁর দুঃখের কথা বলতে বলতে এটা জানালো, সে যতই অত্যাচারিত হোক না কেন এ বাড়ি কিছুতেই ছাড়বে না। কারণ তাঁর আর তো কোথাও যাওয়ার কোন ঠিকানা নেই!
কথাটা শুনে আমার খুব কষ্ট হয়েছিল। সত্যিই তো! একটা মেয়ে র এই বয়সে এসে স্বামীর ঠিকানা ছাড়া আর কি আছে? সেই ঠিকানাটা টালমাটাল হলেই সে রুদ্রমুর্তি ধারণ করতে বাধ্য হয়।
কত মেয়ে কত অত্যাচার সহ্য করতে বাধ্য হচ্ছে নিজের কোন পরিচয় না থাকার কারণে। আগের সময় এখন অতীত। আগে একটা বাড়ির বৌ কে যতটা সম্মান দেখানো হতো এখন কিন্তু একটা বৌ সেই আগের মতো সম্মান পায় না।তাই একটি মেয়ের কেরিয়ারের উপরে আগে নজর দেওয়া উচিত।
চিত্রসূত্র- pixabay.com
একটা সময় আমার নিজের খুব মনে হতো, আমার জীবন টা হবে একটু ভিন্ন ধরনের।আমার একটা মিষ্টি সংসার হবে।আমার সংসার,পরিবার আর স্বামী, এই হবে আমার জগৎ। এর বাইরে আর কিছু নয়।আমি খুব ভালো বৌ হব,মন দিয়ে সংসার করব,খাবো দাবো, ঘুরব, মজা করব।ব্যাস, জীবন স্বার্থক।
আর ছোট থেকে আমার একটা ইচ্ছা ছিল যে, আমি আমার স্বামীর সঙ্গে কখনো ঝকড়া করব না।আমি অন্য আর পাঁচ জনের মতো হব না।কারণ এই ঝকড়া ব্যাপার টা আমার খুব বাজে লাগত।ঝকড়া না করলে তাঁর স্বামী তাঁকে খুব ভালোবাসে এটা আমার মাথায় মধ্যে ঢুকে গিয়েছিল সে ছোট বেলাতেই। আমি ভাবতাম একটা মেয়ের সংসারই সব। এ সব কেরিয়ার টেরিয়ার আবার কি।
তবে আমার স্বামী একটু ভিন্ন ধরনের।সে আর পাঁচ টা ছেলের মতো নয়।তাঁর ভাবনার সঙ্গে আমার ভাবনার কোন মিল ই ছিল না, অনন্ত এই বিষয়ে। তাঁর সঙ্গে পরিচয় হবার পর থেকেই, সে আমাকে পড়াশোনা করতে হবে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে, নিজের একটা পরিচয় তৈরি করতে হবে, এই সব বলে আমার মাথা খারাপ করে দিত।ও পড়ার কথা বললে আমি ভীষণ ই রেগে যেতাম।
আমি মাঝে মাঝে ভাবতাম, তাহলে ও মনে হয় আমাকে নয়,আমি যাতে একটা চাকরি পায়, এটা ভেবেই আমাকে বিয়ে করার কথা ভাবছে, তাই আমার পড়াটা নিয়ে ওর এতো মাথা ব্যথা। কোথায় আমরা সংসারের পরিকল্পনা করব,তা নয়। তাঁর শুধু একি কথা পড়ো আর পড়ো।
চিত্রসূত্র- pixabay.com
কিন্তু আবার আশ্চর্য হতাম এটা ভেবে যে,আমি যখন কোনও চাকরির পরীক্ষা দিয়ে বার হতাম, সে যে কোনও পরীক্ষা- গ্রুপ ডি হোক, আর ডব্লিউ বি সি এস ই হোক, ও কখনো আমার পরীক্ষা কেমন হলো এটা কোনও দিন ও জিজ্ঞাসা করত না। একটার পর একটা চাকরির পরীক্ষায় আমি ব্যর্থ হচ্ছি, কিন্তু তাতে ওর কোনও হেলদোল ই নেই। তখন আমি খুব মজা পেতাম, ভাবতাম যাক বাবা চাকরির ভূত টা ওর মাথার থেকে গেছে। আমি এবার নিশ্চিন্ত।
মেয়েরা তো খাবে আর সংসার করবে,তাই না?আর যাঁরা খুব মেধাবী ছাত্রী তাঁরা চাকরি বাকরি করবে।আমি আগে যেমন ভাবতাম, আমার মনে হয় এখনো বেশির ভাগ মেয়ে ই এটা ভাবে। এবং বেশিরভাগ পুরুষ ও মনে করে , আমার বৌ তো শিক্ষিত ।সবাই কে আমি বলতে পারি আমি একজন শিক্ষিত মেয়ে কে বিয়ে করেছি, এটাই অনেক।তাই, তাঁর আবার ওতো পরিচয়, টরিচয়ের কি আছে। খেতে, পড়তে তো পাচ্ছে ,হাত খরচের জন্য বেশ কিছু টাকাও দিই।ব্যাস এই অনেক।
আমি আজকে এই বিষয়ে হঠাৎ করে লিখতে বসলাম তার কারণ, কালকে আমার এক বান্ধবীর সঙ্গে অনেক দিন পরে আমার কথা হয়। মেয়ে টি অত্যন্ত মেধাবী ছিল। একটা সময় ও আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। কিন্তু কালকে ফোনে ওর গলায় আমি একরাশ কষ্টের সুর শুনতে পেলাম। সেই ছটফটে, কেরিয়ার নিয়ে সচেতন মেয়ে টা আজ আটকে পড়েছে সংসারের বেড়া জালে।তাঁর এখন নিশ্বাস ত্যাগ করার ও যেন সময় নেই।সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সে শুধু দৌড়াছে।কেরিয়ার তাঁর কাছে এখন অতীত। মেয়ে টা শত কষ্ট হলেও মুখে কখনো কোনও যন্ত্রণার কথা বলে না। কিন্তু কাল ওর কথায় আমি লক্ষ্য করেছি দীর্ঘ বিষণ্ণতা।
চিত্রসূত্র- pixabay.com
বিষয়টি নিয়ে আমি অনেক রাত পর্যন্ত ভেবেছি।এবং নিজেকে বার বার প্রশ্ন করেছি, মেয়েদের জীবনে র মূল উদ্দেশ্য তাহলে কি? শুধুই কী সংসার, সন্তান, স্বামী, পরিবার ! আর কিছু নয়?
মেয়েদের কি ইচ্ছা করে না, আমার একটা পরিচয় তৈরি হোক, সবাই আমাকে চিনুক। আমি কিছু একটা অনন্ত করব। নিজেকে একটু সময় দেবো।নিজের ভালো লাগা গুলো খুঁজব।
দুঃখের বিষয় এই কথা গুলো বিয়ের পর একটা মেয়ে, আর ভাবার ই সুযোগ পায় না, বা ভাবতে দেওয়া হয় না!এই আধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে ও মেয়ে রা যে কতটা স্বাধীন সেটা কিছু টা হলেও প্রশ্ন চিহ্ন এর মাঝ খানে দাঁড়িয়ে যায়!
বকলমে হলেও প্রায় পুরুষ ই ভাবে ,তাঁর স্ত্রী কেবল সংসার টাই সামলাক। বেশি আধুনিক হলে মাথায় চেপে বসতে পারে। হ্যাঁ, এটা অবশ্য ঠিক তাঁদের ভাবনা টা যে পুরোপুরি অমূলক তা কিন্তু নয়। প্রচুর মেয়ে স্বাধীনতার অপব্যবহার করে। কিন্তু সবাই তো নয়! কিছু মেয়ের জন্য প্রচুর মেয়ে ঘরে বন্দি হয়ে যায়। এবং কত মেয়ে নিজের ইচ্ছা গুলো, ভালো লাগা গুলো একটা সময়ের পর গলা টিপে মেরে ফেলে। পরে তাঁদের চোখে শুধু সংসার আর বাচ্চা ই রয়ে যায়। এতো বছরের নিজের শিক্ষা, নিজের স্বপ্ন সব শেষ হয়ে যায়।
কিন্তু একটি ভালো সঙ্গী পেলে ,আবার কিন্তু সব কিছু শুরু করা যায়।বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, ঘরে বসে নিজের ভালো লাগা কাজ গুলো করা যায়। অনেক পরিবার আছে, বাইরে গিয়ে চাকরি করা টা পছন্দ করে না, বাইরে গিয়ে কাজ করাটা পছন্দ করে না। ঠিক আছে, বাইরে গিয়ে কাজ করার কোনও প্রয়োজন নেই।এখন প্রচুর কাজ আছে যেটা একটু সময় পেলে ঘরে বসে করা যায়।
কিন্তু তার জন্য প্রযোজন সেই সময় টা।এই সময় টা তো দাওয়াই যায়। ঘরের কিছু কাজ যদি বোঝাপড়া টা ভালো থাকে তাহলে দুজনে,বা পরিবারের অন্য কেউও তো ভাগ করে নেওয়া যায়। ঘরের কিছু দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে, তাঁকে কিছু করার জন্য উৎসাহ দেওয়াই যায়। সে যাতে একটু প্রাণ খুলে বাঁচ তে পারে সেটা দেখার দায়িত্ব পাশের মানুষ টার উপর বর্তায়।
কিন্তু এতো টা আপন ভাবে ভাবার মানসিকতা খুব কম মানুষের মধ্যেই দেখা যায়।তাই তো এখনো যে সব মেয়ে চাকরি করতে চাই, নিজের পরিচয় তৈরি করতে চাই,নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই, তাঁরা একটা চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত বিয়ে করতে ভয় পায়।ভাবে পাঁছে বিয়ের পরে যদি আমাকে,আর তাঁরা চাকরি করতে না দেয়!তাহলে এতো পড়াশোনা ই বৃথা।
একটা মেয়ে সারাজীবন শুধু সংসার করে কাটিয়ে দেবে, এটা আমার মতো এক ঘোর সংসারি করা মেয়েও আজ আর ভাবতে পারে না। আর এই না ভাবতে পারার জন্য আমি আমার স্বামীর কাছে চিরো কৃতজ্ঞ। সে আমার হাতে খাতা কলম তুলে দিয়েছে, আমাকে সব সময় উৎসাহ দিয়ে, একটা নতুন দিগন্তে প্রবেশ করিয়েছে।
আমি আমার ছোট্ট সংসার টা সামলে নিজের ইচ্ছা গুলো সাজাতে পারি, এখন আমি ঐ মানুষটার জন্য এক নতুন জগতে প্রবেশ করেছি।এখন আমি সব থেকে বেশি সময় দিই নিজেকে। আমি স্বাধীন নারী,তবে ঐ মানুষটার হাত ধরে। আমি নিজের ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারি, ইচ্ছা মতো কাজ করতে পারি। এখন আমার জগতে কেবল ই পড়া আর লেখা।
নতুন আইডিয়ার সন্ধানে
চিত্রসূত্র- pixabay.com
যেটা একটা সময় আমি ভাবতেই পারতাম না, যে আমি এতো টা বই পাগল হব।
তবে শুধু নিজে কর্মরত হলে, বা নিজের স্বপ্ন গুলো পূরণ করলেই নারী স্বাধীনতা বা সমাজে নারীর অগ্রগতি সম্ভব হবে না। আমরা সেদিন ই এগিয়ে যাবো যেদিন গ্রাম থেকে শহরের প্রত্যন্ত কোণে গিয়ে নারীর পাশে দাঁড়াবো, তাঁদের বুকে সাহস জোগাতে পারব।তাঁদের স্বপ্ন দেখার জন্য আহ্বান জানাবো।
আর তাঁর জন্য নারীকে একা লড়াই করলে হবে না, সঙ্গে প্রয়োজন পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শক্ত একটি হাতের। নারী পুরুষের দ্বন্দ্ব যাক মুছে, আমরা সবাই মানুষ। আমরা সবাই একসঙ্গে, এক সুখে বাঁচব।আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাব একটি নতুন মুক্ত পৃথিবী গড়ার আঙ্গিনায়। শুধু ভারতীয় সমাজে নয়, সারা পৃথিবীময় নারীর অবস্থান যেন নতুন মাত্রা পায়,এই চেষ্টায় চলো আমরা সকলে মিলে হাতে হাত ধরে এগিয়ে যায়।
আমি আজ আমার সকল বন্ধুদের একটা অনুরোধ করতে চাই, তোমার পাশের মানুষ হোক বা তুমি, একটু প্রাণ খুলে বাঁচো।নিজেকে একটু সময় দাও। কেউ কাউকে বন্দী কর না, সম্পর্কের মধ্যে বাঁধন থাক অটুট তবে একে অপরকে নিশ্বাস নিতে দাও। সবার জীবনে বাঁচার একটা উদ্দেশ্য থাক। সে ছেলে হোক বা মেয়ে স্বাধীনতা সবার প্রযোজন।
মতামত নিজস্ব।
চিত্রসূত্র- pixabay.com
Tags, সমাজে নারীদের অবস্থান
ধন্যবাদ 😊
কোন মন্তব্য নেই: