কীভাবে বুঝবেন সম্পর্ক শেষ করতে হবে
কীভাবে বুঝবেন সম্পর্ক শেষ হয়ে যাচ্ছে কি না:
সম্পর্ক জীবনের মূল স্তম্ভ। এই পৃথিবীতে সম্পর্ক হীন কোন মানুষ মুক্ত মনে বাঁচ তে পারে না। আমরা সকলেই কোন না কোন সম্পর্কের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে যুক্ত হয়ে জীবন পরিচালনা করি। প্রতিটি সম্পর্ক খুব নরম,কোমল,হৃদয়স্পর্শী। তাই তো সম্পর্কের মধ্যে সামান্যতম চির ও সম্পর্কের
ফাটল ধরায়।
প্রতিটি সম্পর্কের মধ্যে একটা আলাদা আলাদা শ্রদ্ধা, ভক্তি, প্রেম,প্রীতি, ভালোবাসা থাকে। বাবা মায়ের সঙ্গে সন্তানের ভালোবাসা এক অন্য অনুভূতি, ভাই বোনের সম্পর্ক সে এক অন্য মজা, বন্ধুর প্রতি প্রীতি সে আর এক স্মৃতি, স্বামী স্ত্রীর প্রেম ভালোবাসা সেও তো ভিন্ন সবার থেকে।এছাড়া আরও আছে হাজারও সম্পর্কের মধ্যে হাজারও অনুভূতি।
কিন্তু প্রতিটি সম্পর্কের মধ্যেই একটা আলাদা হৃদ্যতা রাখতে হয়। এই হৃদ্যতা বজায় রাখার দায়, কোন একজনের নয় সকলের উপরে বর্তায়। আমরা সকলেই চেষ্টা করি নিজের রক্তের সম্পর্ক গুলো সুস্থ, সুন্দর রাখতে। যদিও বর্তমানে রক্তের সম্পর্কের মধ্যে ই সব থেকে বেশি বিবাদ বিদ্যমান।তবুও মানসপটে এই সম্পর্কের স্মৃতি গেঁথে থাকে আজীবন। তথ্য বলছে, বর্তমানে স্বামী স্ত্রী, বা প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে তৈরি হওয়া সম্পর্ক অসুস্থতায় ভরপুর। সামাজিক, পারিবারিক, মানসিক, অর্থনৈতিক বিভিন্ন কারণে সম্পর্ক তার জৌলুস হারাচ্ছে। ভেঙ্গে পড়ছে সম্পর্কের ভীত।আলাদা হতে হচ্ছে দুটি মানুষ কে, সব প্রতিজ্ঞা ভুলে।
চিত্র সূত্র- pixabay.com
আমরা একটা বয়সের পর,সুস্থ ভাবে জীবন যাপনের জন্যই সম্পর্কের মধ্যে প্রবেশ করি। কিন্তু সম্পর্কের মধ্যে যদি সেই সুস্থতা টাই বজায় না থাকে তাহলে সে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা একটু হলেও মুশকিল। একটু খানি, হাসি, একটু খানি আনন্দ, একটুকরো ভালোবাসার লোভেই সবাই সংসার জীবনে প্রবেশ করে। অঙ্গীকার বদ্ধ হয় আজীবন পাশে থাকার। কিন্তু সেই অঙ্গীকারের মধ্যে যদি ফুটে ওঠে মানসিক বীভৎসতা! তাহলে তখন উপায়?
এক সঙ্গে যখন মানুষ বসবাস করে তখন কত চেনা মুখ অচেনা মুখোশে ঢাকে। কত তাবড় তাবড় মানুষ ও সম্পর্ক জীবনে প্রবেশ করে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই হিমশিম খেয়ে যায়। কিন্তু ইচ্ছা করলেই সবাই সম্পর্কের বিবাদ থেকে বেরিয়ে মুক্ত মনে বাঁচ তে পারে না। কত মানুষ আজীবন এই বেড়া জালে ফেঁসে থাকে তার কোন ইয়ত্তা নেই। দুই এক জন বিখ্যাত মানুষের উদাহরণ তুলে ধরি----
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন কে আমরা সকলেই চিনি। কিন্তু তাঁর জীবনের করুন কাহিনী আমরা হয়তো সকলেই অবগত নই। তিনি যাঁকে প্রাণের থেকেও বেশি ভালোবাসতেন সেই মেয়েটিকে তিনি জীবন সঙ্গী হিসেবে পান নি। কারণ মেয়ে টি একটি কঠিন রোগে লিঙ্কনের সামনেই মারা যায়। তার পরে লিঙ্কনের জীবনে অনেক উথাল পাথাল ঢেউ বয়ে গেছে। পরে তিনি মেরী টম কে বিবাহ করেন, বলা ভালো মেরী টম লিঙ্কন কে বিবাহ করতে বাধ্য করেন। তাঁদের বিবাহ জীবন ইতিহাসের পাতায় এক লজ্জাজনক বিবাহ হিসাবে বর্ণিত আছে।
কারণ দুজনের শিক্ষা দীক্ষা, অতীত, রুচি, মানসিক দৃষ্টিভঙ্গী কোনটাতেই মিল ছিল না। মেরী টমের এতোটাই ক্রোধ ছিল যে, মাঝে মাঝে লিঙ্কনের মুখে গরম কফির কাপ ছুঁড়ে দিতেও দ্বিধা বোধ করতেন না। লিঙ্কন সামাজিক লজ্জার খাতিরে এই সম্পর্ক ছিন্ন করার ইচ্ছা থাকলেও বাস্তবে সেই ইচ্ছার পূর্ণতা পায় নি। সে এক বিশাল কাহিনী।
বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিস তার কলহপ্রিয়া স্ত্রীর সাহচর্য থেকে আত্মরক্ষার জন্যই দূরে সরে গিয়ে এথেন্স শহরের কোন এক গাছের তলায় বসেই তার দার্শনিক তত্ত্ব প্রচার করতেন।
আরও পড়ুন: দাম্পত্য সম্পর্কে টানাপোড়েন
পৃথিবীর প্রতিটা মানুষই এক বুক স্বপ্ন নিয়ে সম্পর্কে লিপ্ত হয়। যাঁরা ভাগ্য বান তাঁরা সম্পর্কের সুখ জীয়ন রসের মতো উপভোগ করে। কিন্তু সাধারণ থেকে বিখ্যাত অনেক মানুষের জীবনে আবার এই সম্পর্ক ই আজীবন কাঁটার মতো বিঁধতে থাকে।
বিশেষ করে মেয়েরা, আর্থিক, সামাজিক, পারিবারিক সহযোগিতার অভাবে হাজার সমস্যা সহ্য করেও লোক দেখানো সম্পর্কে আবদ্ধ রয় শেষ জীবন পর্যন্ত। কারণ একটি মেয়ের বিয়ের পরে তার পরিবার কখনোই যায় না, সেই মেয়েটি সংসার না করে ঘরে ফিরুক। তার যত সমস্যায় হোক না কেন তাকে তার পরিবার মানিয়ে চলার পরামর্শ ই দেবে। কিন্তু যখন বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায় তখন অনেক প্রতিশ্রুতি পূর্ণ কথা শোনা যায়। এই প্রতিশ্রুতি টা যদি আগে কোন মেয়ে পায় তাহলে অনেক প্রাণ রক্ষা হয়।
এখানে সমাজের একটা বস্তাপচা ধারণা আছে, তারা ভাবে আগে প্রতিশ্রুতি দিলে মেয়েরা তার অপব্যবহার করতে পারে। কিন্তু সবাই একটা বিষয় ভুলে যায়, কোন মানুষ ই স্বেচ্ছায় সংসার বা সম্পর্ক ত্যাগ করতে চায় না। বিশেষ করে মেয়েরা সংসারের স্বপ্ন নিয়েই বড় হয়, তাই আমাদের কাছে সংসার ই হল জীবনের মূল অবলম্বন।
এই প্রসঙ্গে আর একটা কথা অবগত করায়, প্রচুর ছেলেও কিন্তু একটা মেয়ের কাছে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচারিত হয়। তার উদাহরণ অবশ্য উপরে উল্লেখ করেছি।
আমি ব্যক্তি গত ভাবে মনে করি যদি কোন সম্পর্কের মধ্যে নিত্যদিন অশান্তি, ঝামেলা, দুঃখ, যন্ত্রণা বাড়তে থাকে তাহলে পরিস্থিতি থাকলে তেমন সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে আসাই শ্রেয়। এতে শুধু দুটি মানুষ ই ভালো থাকবে না, একটা পরিবেশ, পরিবার সুস্থ থাকবে, সুন্দর থাকবে।
আসুন এবার জানি,
কীভাবে বুঝবেন সম্পর্ক শেষ করতে হবে?
#1.সম্পর্কের মধ্যে অনুভূতি টা মরে গেলে:
আগেই বলেছি, প্রতিটি সম্পর্কের মধ্যে আলাদা আলাদা মিষ্টি অনুভূতি থাকে। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক টা কতটা মধুর, কতটা প্রেমময় তা ভাষায় প্রকাশ করা সব সময় সম্ভব হয় না। সেই সম্পর্কের মধ্যে অনুভূতি টা না থাকলে প্লাস্টিকের গোলাপ এর সমতুল্য হবে। যার গোলাপ ফুলের ন্যায় আকার আছে, কিন্তু গন্ধ নেই।
আমার দেখা একজন স্বামী স্ত্রীর ছোট্ট একটা কাহিনী তুলে ধরব---
স্বামী সারা দিন কাজ করে ঘরে ফিরেছে গায়ে প্রবল জ্বর নিয়ে। স্ত্রী প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করে যাচ্ছে, মানুষ টার পাশে এসে সেবা যত্ন করা তো দূরে থাক, তাকে গল্প থেকে কেন ডেকে আনা হল এই নিয়ে শুরু হল তুমুল কান্ড।
এমন অনুভূতিহীন সম্পর্ক বয়ে নিয়ে বেড়ানো যন্ত্রণা ছাড়া কিছু নয়।
আপনার সঙ্গী যদি, আপনার দুঃখ, কষ্ট, সমস্যায় আপনার সঙ্গ না দেয়, কোন রকম সান্ত্বনা, সহানুভূতি না দেখায় তাহলে বুঝবেন আপনার প্রতি তার টান টা নেই। কারণ সম্পর্ক শুধু খাওয়া, পড়া আর শরীরের খিদে মিটিয়ে নিলেই সব হয় না, এখানে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম অনুভূতির খুব মূল্য।
#2.আপনি ভালো না থাকলে:
আপনি ভালো আছেন কি খারাপ আছেন সেটা একমাত্র আপনিই জানেন। সত্যি বলতে, দুটি মানুষ একসঙ্গে যদি হাসি, খুশি, আনন্দ করে না থাকে তাহলে সংসার কখনোই সুখের হয় না।
আমাদের গ্রামের বাড়িতে একটা বৌদির সঙ্গে আমার মিল ছিল, আমাদের প্রতিবেশী। আমি তাকে কখনোই হাসতে দেখতাম না। সে নিজের থেকে কারো সঙ্গে মনের কষ্ট শেয়ার করত না। কিন্তু আমি বুঝতে পারতাম উনি ভালো নেই।
একদিন কথায় কথায়, আমি নিজেই তাকে জিজ্ঞেস করলাম, সে তার সংসারে কতটা ভালো আজে সে সম্পর্কে । তখন সে জানালো, তার স্বামী প্রতি রাতে তার গায়ে হাত তোলে, তার উপরে অমানুষিক শারীরিক অত্যাচার করে। তার কথায়-- আমার পালিয়ে যাওয়ার কোন জায়গা নেই তাই এই নরকে পড়ে আছি। মরতে আমি ভয় পায়, তাই মরতে পারি না। তাছাড়া আমার মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না! আমি ভালো নেই, প্রতি রাতে আমি মরি, সকালে মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আবার বেঁচে উঠি।
এই জন্যই আমার দেখা কিছু অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করেই আমি প্রতিটি মানুষ কে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা বলি। নিজে স্বাবলম্বী না হলে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। এমন অনেক মেয়ে আছে, যারা দেখতে সমাজের দেওয়া ট্যাগ অনুযায়ী হয়তো সুন্দর নয়, তাদের জীবন ও যে কি দুর্বিষহ হয়, তা ঐ মেয়ে গুলোই জানে। তাই নিজের পায়ে দাঁড়ানো টা ভীষণ জরুরী। যাতে কোন সমস্যা হলে, নিজে ভালো না থাকলে ওমন প্রাণহীন সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে গিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করা যায়।
#3.কোন বিষয়ে কোন মতের মিল না হলে:
এর অর্থ কিন্তু এটা কখনোই নয় যে, একটা কোন বিষয়ে মতের অমিল হলেই সে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। আমাদের যে সমস্ত মতের মিল হবে তার ও কোন মানে নেই। তবে একটা বিষয়েও যদি দিনের পর দিন মতের অমিল হয় তাহলে তার সঙ্গে একত্রে বাস করা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
হ্যারি সি.ই. স্টেনমেজ তাঁর পত্রিকা 'ফিলনিক্যাল সাইকোলজি'তে বলেছিলেন--
"যে কোন বিবাহিত জীবনের সাফল্য সঙ্গীর সঙ্গে তার পছন্দ অপছন্দ আর অভ্যাসের মিলের উপরেই নির্ভর করে।"
আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে একটু সময় কাটাতে বেশি ভালোবাসেন। কিন্তুু আপনার স্ত্রী র সেটা না পছন্দ। বিয়ের প্রথম প্রথম এগুলো মেনে নিলেও পরে যখন দিনের পর দিন ব্যক্তি স্বাধীনতায় বাঁধা আসে তখন ছেলে হোক আর মেয়ে কেউ সেটা মানতে পারে না। তবে রাগারাগি না করে ভালোবেসে নিষেধ করলে সেটা কিন্তু কাজে দেয়। তবে তাতে অবশ্যই যুক্তি থাকতে হবে। সঙ্গীর বাঁধা দেওয়া টা যদি মানসিক রোগ হয় তখন সেটা চিন্তার বিষয়।
আমি এমন একজন দম্পতি কে চিনি যে, চায় না তার স্বামী তার সঙ্গে ছাড়া অন্য আর কারো সঙ্গে সম্পর্ক রাখুক। তাদের বিবাহিত জীবন দিন দিন যন্ত্রণাময় হয়ে উঠছে। এবং খুব অল্প দিনের সম্পর্ক হওয়ার সত্ত্বেও তার স্বামী এখন ভাবতে শুরু করেছে তার সঙ্গে সংসার করবে কি করবে না, এই নিয়ে আছে দোটানায়।
#4. গুরুত্ব না পেলে:
সম্পর্কের মধ্যে একে অপরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে না করলে সেই সম্পর্কের মধ্যে কোন শ্রদ্ধা থাকে না। আমি খেলাম কি না খেলাম, আমি বাড়িতে থাকলাম কি না থাকলাম এ সব যদি আমার স্বামীর কোন মাথাব্যথা না থাকে তাহলে সেটা ভাববার ই বিষয়। অনেক মানুষ নিরুপায় হয়ে কিছু মনে করে না বা মনের কষ্ট হয়তো বাইরে প্রকাশ করে না কিন্তু তার বুকের মধ্যে ফালাফালা হয়ে যায়।
সম্পর্কের কি মানে আছে যদি, একে অপরের গুরুত্ব ই না দেয়। গুরুত্ব তখনই দেয় না, যখন সে তার পাশের মানুষটার কেয়ার করে না, বা অন্য কোন নতুন সম্পর্কে যখন জড়িয়ে পড়ে তখন।
আপনি কি খেলেন, কোথায় গেলেন বা কি পড়লেন তাতে যদি আপনার সঙ্গীর কোন প্রকার উৎসাহ না থাকে তাহলে সে সম্পর্কে কোন দায়বদ্ধতা ও থাকে না। উপায় থাকলে এমন সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে আসাই শ্রেয়।
#5. সমস্যা কখনই যখন শেষ হয় না:
সব সমস্যার একটা সীমাবদ্ধতা আছে। যখন সেই সীমা লঙ্ঘন হয়, তখন গুরুত্ব সহকারে ভাবনার প্রয়োজন পড়ে। এখানে একটা কথা বলে রাখি, যখন কোন সম্পর্কের মধ্যে নিত্যদিন সমস্যা চলতে থাকে তখন সে সমস্যা দিন দিন জটিল আকার ধারণ করে। কারণ কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলে না, এবং একে অপরের দোষ ত্রুটি খুঁজতে মুখিয়ে থাকে। এখানে ইগোর লড়াই শুরু হয়ে যায়।
চিত্র সূত্র- pixabay.com
আমরা যখন নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা করি তখন আমাদের চারিদিকে নেতিবাচক চিন্তারা আমাদের মন কে বিক্ষিপ্ত করে তোলে এবং আমাদের ভাবনা চিন্তা নীচে নামতে থাকে। এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব ইতিবাচক ভাবনা দিয়ে সব কিছু বিচার করলে।
এখানে এক পক্ষ নয়, দু পক্ষ কেই এগিয়ে যেতে হবে সমস্যার সমাধান করতে। তা না হলে সে সম্পর্ক অসুস্থতার রূপ নেবে। সমস্যার থেকেও ইগো জীবন কে উঁই পোকার মত খেয়ে নেবে। তাই সাবধান।
#6. অবহেলার স্বীকার হলে:
আমাদের মন খুব নরম স্পর্শকাতর। পৃথিবীর কোন প্রাণীই অবহেলা সহ্য করতে পারে না। মানুষ তো নয়। সবাই ই কিন্তু পাশের মানুষ টা র কাছে দামী দামী উপহার চাই না, কিন্তু সবাই চাই তাঁর পাশের মানুষ টা তাঁকে আগলে রাখুক।
আপনার সঙ্গী কি আপনার জন্য আলাদা সময় দেয়? আপনার কিছু হলে গুরুত্ব দেয়? আপনার খারাপ লাগা তার মনে কোন প্রভাব ফেলে? যদি এগুলোর কোন টিই না থাকে তাহলে আপনি উঁলু বনে মুক্ত ছড়াচ্ছেন। (তার মানে কিন্তু এটা নয়, যে সব সময় আপনার পিছন পিছন সে ঘুরবে।) এই লক্ষণ গুলো যদি কোন দিন ও দেখতে না পান, বা হঠাৎ করে আপনাকে অবহেলা শুরু করে তখন সিরিয়াস হতে হবে।
#7.সম্পর্কের মধ্যে সম্মান না থাকলে:
এমন অনেক মানুষ আছে, যাঁরা বাইরের মানুষের সামনে নিজের সঙ্গী কে অপদস্থ করে অপমান করে। যে কথা গুলো একান্ত ব্যক্তিগত সেগুলো নিয়ে অন্যের সঙ্গে আলোচনা করে। এরা একে অপরকে কখনোই সম্মান করতে পারে না বা সম্মান করতে জানে না।
যেখানে মিনিমাম সম্মান টুকু নেই, সেখানে নিজের আত্মসস্মান কে বলি দিয়ে থাকাটা খুব কষ্টের। তবুও প্রচুর মানুষ কোন উপায় না থাকায় এভাবেই জীবন কাটায়।
নিজে বড় হওয়ার জন্য কখনোই সঙ্গী কে ছোট করে কথা বলা উচিত নয়। তার সঙ্গে যদি আপনার একান্তই না বনিবনা হয়, তাহলে তাকে সম্মানের সহিত তার প্রাপ্য বুঝিয়ে তাকে মুক্তি দিন। আর যদি কোন মেয়ে তার পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে থাকতে না চায়, তাহলে তার ও উচিত তার সঙ্গীর উপর কোন দোষারোপ না চাপিয়ে বা কোন মিথ্যা বদনাম না দিয়ে তাকে মুক্ত করে দেওয়া। এতে নিজের কাছে পরিষ্কার থাকা যায়। আর নিজের মনের কাছে পরিষ্কার থাকাটা ভীষণ জরুরী।
#8. ভালোবাসার প্রকাশ না পেলে:
একটা সম্পর্কের মধ্যে শারীরিক ভালোবাসার থেকে মানসিক ভালোবাসার মূল্য অনেক বেশি। যতই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন না কেন, যদি আপনাদের মধ্যে মানসিক ভালোবাসা টা নষ্ট হয়ে যায় বা না থাকে তাহলে সেখানে শারীরিক সম্পর্ক কিন্তু নোংরামো হয়ে দাঁড়ায়।
স্রেফ অধিকারের বশে গায়ের জোর খাটানো টা সত্যিই খুব খারাপ।
সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসা না থাকলে সে সম্পর্ক মৃত বলা চলে। যদি মনের সঙ্গে মন না মেলে , পাশের মানুষ টার প্রতি কোন হৃদ্যতা না থাকে তাহলে তেমন সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে আসুন। ভালোবাসা তো মিষ্টি অনুভূতি তার প্রকাশ পাওয়া যায় কথায় কথায়। সেই প্রকাশ টুকু না পেলে এক সঙ্গে বসবাস করার কি মানে!
উপসংহার
জীবন টা খুব ছোট্ট। আমরা মানব জীবন সম্ভবত একবার ই পেয়েছি, তাই সেই জীবন কে খুব ভালোবাসুন। নিজের ভালো মন্দের খোঁজ নিজে রাখুন। নিজের দায়িত্ব নিজে নিতে শিখুন। আমরা প্রতিটা সম্পর্ক কে খুব ভালোবাসব, শ্রদ্ধা করব, সম্মান করব। কিন্তু সব সময় সব কিছুর আগে নিজেকে সম্মান করব, নিজের ভালোলাগা, খারাপ লাগার মর্যাদা দেব।
যদি আপনার সম্পর্কের মধ্যে দম আটকে আসে, সম্পর্কের মধ্যে যদি কোন সুখ খুঁজে না পান তাহলে সেখান থেকে বেড়িয়ে আসুন। দরকার হলে সবার সঙ্গে ফাইট করুক। তবে প্রথমে পাশের মানুষ টাকে সময় দিন, তার করা ভুল গুলো তাকে বুঝিয়ে বলুন, আপনার কষ্ট, সমস্যা তাকে বোঝান। এরপরেও যদি সে না বোঝে, আপনার প্রতি কোন গুরুত্ব না দেয়, এবং আপনি যদি বুঝতে পারেন সে ইচ্ছা করে আপনার সঙ্গে খারাপ আচরণ করছে তাহলে দ্বিতীয়বার আর কিছু না ভেবে সম্পর্কের থেকে বেরিয়ে আসুন। কিন্তু তার আগে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করুন।
এটা ছেলে মেয়ে দুজনের জন্যই প্রযোজ্য। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই সব কিছু তলিয়ে ভাববেন। আগে পিছে সব দিক বিবেচনা করে নেবেন।
ধন্যবাদ।
তথ্য সূত্র সংগৃহীত।
চিত্র সূত্র- pixabay.com
TAGS, সম্পর্ক, লাইফস্টাইল, relationships is over
কোন মন্তব্য নেই: