জীবনে সাফল্য লাভের ১৫টি উপায়
জীবনে সাফল্য লাভের ১৫টি উপায়:
জীবনে সফলতা অর্জন করতে চান না, এমন ব্যক্তি এই ভূ- পৃথিবীতে নেই। মানুষের জীবনের প্রধান চাহিদায় হল, সাফল্য অর্জন করা। কিন্তু দুুঃখের বিষয় সাফল্যমণ্ডিত ব্যক্তির সংখ্যা খুুুবই কম দেখা মেলে।জীবনকে সুুুুুন্দর করে মেলে ধরতে হলে,নিজের ব্যক্তিত্ব তুুলে ধরতে হলে জীবনে সফলতা লাভ করতেই হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সফলতা মানে কি? এই সাফল্য লাভের উপায় বা কি?
সাফল্য:
একদম সহজ সরল ভাষায় যদি বোঝানো যায়, তাহলে সাফল্য মানে, আমরা জীবনে যে যে জিনিস গুলি চাই, সেটা যখন হাতের মুঠোয় পেয়ে যায় তখন আমরা নিজেদের সফল ব্যক্তি বলতে পারি। তবে এই চাওয়ার অনেক ভাগ আছে। চাওয়া মানে এই নয় যে, তুমি একটা ভাল ড্রেস চাইছ, আর সেটা পেয়ে গেলেই তুমি নিজেকে সফল ব্যক্তি বলে মনে করবে। সাফল্যের একটা মানদণ্ড আছে, সাফল্য মানে, নিজের ভিতরের যোগ্যতা কে বাইরে প্রকাশ করে তার মূল্য পাওয়া। পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের মধ্যেই সাফল্য অর্জন করার ক্ষমতা আছে, এই ক্ষমতা ব্যক্তি ভেদে, ভিন্ন ভিন্ন নয়, কিন্তু অনুভব ভেদে, ইচ্ছা শক্তি ভেদে,চিন্তা শক্তি ভেদে সাফল্যের সফলতা নির্ভর করে। আসলে কল্পনাই হচ্ছে ব্যক্তিগত সাফল্যের চাবিকাঠি।
চিত্র সূত্র- pixabay.com
যখন আমাদের বয়স খুব কম থাকে তখন এই সব সাফল্য টাফল্য আমাদের মাথার উপর দিয়ে যায়। আমরা এর গুরুত্ব অনুধাবন করার প্রয়োজন ই অনুভব করি না। যখন এর গুরুত্ব বুঝি তখন দেখা যায় সময় অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়ে কিছু মানুষ ঝাড়া দিয়ে ওঠে, আর কিছু মানুষ সময় চলে যাওয়ার অজুহাত খাঁড়া করে, নিজের ভাগ্যের উপরে দোষ চাপায়।
আমরা হলাম, পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে অলস প্রাণী। কিন্তু, জীবনে সাফল্য অর্জন করতে গেলে, নিজেকে প্রতিক্ষণে নিংড়াতে হবে, নিজের মধ্যে থাকা প্রতিভা কে টেনে হিঁচড়ে বার করতে হবে। ধ্যানে, জ্ঞানে, স্বপ্নে জাগরণে কেবল সাফল্যের কথায় ভাবতে হবে। জীবন থেকে বাদ দিতে হবে অনেক আরামদায়ক জিনিস। আমরা এখানেই সফল ব্যক্তির থেকে পিছিয়ে পড়ি। আমরা নিজেকে আরামদায়ক স্থান থেকে বার করতে চাই না। ফলে, স্বপ্ন আমাদের অধরাই থেকে যায়।
জীবনে সাফল্য লাভ করতে গেলে আগে, মন কে প্রস্তুত করতে হবে। তুমি জীবনে কি কি চাও তার একটা রূপরেখা তৈরি করতে হবে এবং আগে পিছে ভাবা বন্ধ করে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।সাফল্য লাভের তাগিদ না থাকলে সে কখনোই কোন রাস্তা খুঁজে পাবে না। এই তাগিদ টা আসবে ভিতর থেকে। তুমি যখন কোন কাজ করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে তখন তোমার মধ্যে আপনা আপ এনার্জি এসে যাবে।
একজন মানুষ এক কিলো ওজন দুই থেকে তিন ঘন্টা বহন করার পর হাঁপিয়ে যায়, আর একজন গর্ভবতী মা টানা ন'টা মাস তাঁর বাচ্চা কে পেটে করে বয়ে বেড়ায়, কোন অভিযোগ ছাড়াই। মায়ের এই এনার্জি আসে, মা হওয়ার তাগিদ থেকে।
আমেরিকার বিখ্যাত ব্যক্তি, আর্ণ হড কেন্ট কে প্রায় অনেকেই জিজ্ঞাসা করতেন--
কাজে, এতো এনার্জি তুমি পাও কোথা থেকে? এই প্রশ্নের তিনি চমৎকার উত্তর দিতেন, তিনি বলতেন--
"তুমি হয়তো ভাবছ, তুমি এনার্জি সৃষ্টি করতে পার। কিন্তু তা কখনোই নয়, এনার্জি তোমার মধ্যেই সঞ্চিত আছে, তুমি কেবল সেটাকে মুক্ত করে দিচ্ছ।তবে মনের মধ্যে আকাঙ্ক্ষার জন্ম না হলে এনার্জি পূর্ণ প্রকাশিত হতে পারে না।"
ড:আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল বলতেন----
" আমি আমার মনকে তৈরি করে নিয়েছিলাম যে, যে কাজটি আমি করতে চাই, তাতে সফলতা অর্জন করতে যদি আমার সমস্ত জীবন লেগে যায়, তাও স্বীকার করে নেব। অসংখ্য বার বিফল হওয়ার পর যখন আবিষ্কার টি করতে পারলাম, তখন মূল ব্যাপার টা কত সহজ ছিল সেটা বুঝে অবাক হয়ে গেলাম।"
আমরা সাধারণত মানুষ ও এই পদ্ধতি অবলম্বন করে অসাধারণ হয়ে উঠতে পারি। যে কাজটি করতে চাইছো, সেটার শেষ না দেখে ছেড়ো না। কাজে যদি ফাঁকি না দিই, তাহলে কাজ আমাদের ফাঁকি দেবে না।
প্রতিটি সফল ব্যক্তির কিছু কমন বৈশিষ্ট্য আছে। সেই কমন বৈশিষ্ট্য গুলি হল--- বিনয়ী মনোভাব, মিতব্যয়ীতা, তীক্ষ্ম দৃষ্টি, ধারালো চিন্তাধারা, লড়াই করার জেদ, সাহসের সঙ্গে সব কিছু মোকাবিলা করার ইচ্ছা,এবং প্রচুর অধ্যাবসায়।
আমরা সফল ব্যক্তিদের সফল হওয়ার কাহিনী টা পড়তে চাই না। আজ যে রিলায়েন্স কম্পানির বিশ্বজুড়ে এতো সফলতা-- তার পিছনে কিন্তু ভীরু ভাই আম্বানির মাথার ঘাম পায়ে ফেলা পরিশ্রম লুকিয়ে আছে। তাছাড়া মুকেশ আম্বানির জীবনেও কিন্তু একটা সময় দারিদ্র্যের ছায়া নেমে এসেছিল। তবে তিনি জীবনে রিস্ক নিতে ভয় পান নি বলে, আজ সাফল্যের শীর্ষতম স্থানে পৌঁছে গেছেন। তাঁর তীক্ষ্ম বুদ্ধি, অদম্য সাহস, এবং নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস তাঁকে সাফল্য আনে দিয়েছে।
তুমি চাইছ, একটা চাকরি পেতে, বা ভাল ব্যবসা করতে অথচ তুমি সময় কাটাচ্ছ সোশ্যাল মিডিয়ায় বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে এবং ব্যর্থ হলে দোষ দিচ্ছ ভাগ্য কে, এমন করতে থাকলে তুমি অতলে তলিয়ে যাবে। একটা বিষয় যদি, আমরা মাথায় রাখি, তাহলে আমরা কাজ করার তাগিদ অনুভব করতে পারি, তা হল-- অর্থ না থাকলে তোমার কে কেউ মূল্য দেবে না। বাজারে তাঁকেই লোকে চা খাওয়ায় যাঁর, গায়ে দামি পোশাক থাকে। তাকেই এই পৃথিবী তোষামোদ করে চলে। তাঁর দেখে হিংসা না করে, তাঁর মতো হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
মনে রাখতে হবে, আমাদের মন হল একজন মাস্টার তাঁতি যে, জীবনের জাল বোনে; একজন দক্ষ রচয়িতা, যে কলম হাতে নিয়ে জীবনের গল্প লেখে।একজন ডিজাইনার যে, জীবনের নকশা তোলে। একজন ভাস্কর শিল্পী- যার কাজই হল জীবনের কারুকার্য করা। একটি জীবনের মধ্যে সব বৈশিষ্ট্য লুকিয়ে আছে, তুমি কেবল তাকে উন্মুক্ত কর। জীবনে সাফল্য লাভের কোন বয়স থাকে না, আমরা মিছে মনে করি, আমি আর পারব না, আমার বয়স পেরিয়ে গেছে। একটা ছোট্ট উদাহরণ দিই---
মাকার্স পোরসিয়াস ক্যাটো, --- গ্রীক ভাষা শিখেছিলেন আঁশি বছর বয়সে ।
আমেরিকার কম তানের কন্ঠস্বরের গায়িকা- মাদাম এনেষ্টিনা হ্যাঙ্ক-- যিনি দিদিমা হওয়ার পর সঙ্গীতে সফলতার চূূূূড়ায় পৌঁছেছিলেন।
গ্রীক দার্শনিক সক্রেটিস বাদ্য যন্ত্র বাজাতে শিখেছিলেন, আঁশি বছর বয়সে।
মাইকেল অ্যাঞ্জোলো তাঁর মহানতম ছবিটি এঁকে ছিলেন সেই আঁশি বছর বয়সেই ।
এছাড়া স্যার আইজ্যাক নিউটন কর্মক্ষেত্রে মজবুত হয়েছিলেন প্রায় পঁচাশি বছর বয়সে।
আর আমাদের প্রজন্ম কম বয়সেই হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে জীবন নষ্ট করছে। আমরা এখনই যেন জ্যান্তই মরে আছি!
তুমি জীবনে যা পেতে চাও তার বীজ তোমার মস্তিষ্কের কোষেই বপন করা আছে।যদি তা অঙ্কুরিত হওয়ার জন্য সঠিক জায়গা পায়, তবে তা তোমাকে অবশ্যই শিকড়ে পৌঁছে দেবে। একজন ওস্তাদ সারেঙ্গী মৃত তার গুলির থেকে সুন্দর সুরের জন্ম দিতে পারে। সেভাবেই আমরাও নিজের নিষ্প্রাণ মেধাকে জীবন্ত করে তুলতে পারি। তার জন্য প্রযোজন একটু যত্ন ও আত্মবিশ্বাসের।
তুমি জীবনে যেটা চাও জীবন তোমাকে সেটাই দেবে, তুমি শুধু তাকে সময় দাও।
চলুন এবার জানি সাফল্য লাভের ১৫ টি উপায়-----
#1.কঠিন কাজ তাড়াতাড়ি কর:
জীবনে সাফল্য লাভ করতে গেল
যে কাজটি কঠিন বলে মনে হচ্ছে, সেটি আগে কর। একবার যদি, মন বলে, এ কাজ আমার দ্বারা হবে না, আমি পারব না, তাহলে তুমি কখনোই সে কাজ আর করতে পারবে না।
অথচ, সাফল্য মানেই সে কাজ কঠিন হবেই। আমি আজকে আর্টিকেল লিখছি, তোমাদের কি মনে হয়, আমি লেখা লিখি ছোট থেকে করছি? না, কখনোই না, এটাই আমার কাছে একটা সময় অসম্ভব কাজ ছিল, কিন্তু আমি চেষ্টা করে গেছি, কাজটা চালিয়ে গেছি। যার ফলে আজ মোটা মুটি একটু কলম চালাতে পারছি।
আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে কোন না কোন গুন লুকিয়ে আছে। তুমি একা বসে একটু ভাবো ঠিক পেয়ে যাবে। আর পারব কি পারব না এই দ্বিমত কখনোই মনে স্থান দেবে না। যে কাজটি করতে চাও, সেটা মুখে বার বার উচ্চারণ কর যে, আমি পারবই। পৃথিবীতে কঠিন বলে কোন কাজ নেই, কাজটা শুরু করো, সহজ হয়ে যাবে।
#2. সব কাজে সেরা হবো এই মনোভাব ত্যাগ কর:
কিছু কিছু মানুষ আছে যাঁরা, মনে করে তাঁরা অলরাউন্ডার। এটা কখনোই সম্ভব নয়, একটা মানুষ সব ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করবেই এমন কোন মানে নেই। কাজ করতে গেলে ব্যর্থতা আসবেই, যে কাজ করে তারই ভুল হয়, যে কাজ করে না তাঁর কখনো ভুল হয় না।
সব কাজেই সেরা হবো এই মনোভাব থাকলে অচিরেই মনে হতাশার জন্ম নেবে। ধরুন, আমি গল্প লিখি, তার মানে এটা কখনোই সম্ভব নয়, যে আমার সব গল্প লেখা দারুণ হবে। ভালো, খারাপ হতে হতেই একদিন ঠিক শিখে যাবো।
কোন কাজ মনের মতো না হলে, কেন সেটা মনের মতো হলো না, এটা ভাবতে থাকলে সময় নষ্ট হবে। এবং পরের কাজ ও আবার খারাপ হবে।
#3. ঘড়িতে নয়, মস্তিষ্কে অ্যালার্ম সেট কর:
আমাদের মস্তিষ্ক যে কতটা সজাগ সেটা আমরা অনেকেই জানি না। সত্যিই ঘড়িতে নয়, ঘুুুুমাতে যাওয়ার আগে যদি মস্তিষ্ক কে নির্দেশ দেওয়া যায়, তুমি ঘুম থেকে কটায় উঠতে চাও যদি সেটা মুুুুখে বলো তাহলে ঠিক সময়ে মস্তিষ্ক তোমাকে তুলে দেবে। তার জন্য অবশ্যই তোমার মধ্যে সকালে ওঠার তাগিদ টা থাকতে হবে।
জীবনে সাফল্য লাভ করতে গেলে সূর্য উদিত হওয়ার আগে তোমাকে উদিত হতে হবে। সকালে ঘুম থেকে ওঠা একটি ভাল অভ্যাস এর লক্ষণ।
#4. কমফর্ট জোন কে বিদায় কর:
সফলতা আর আরাম একে অপরের পরিপূরক নয়। যে যত সফল ব্যক্তি তাঁর কাজের পরিধি তত বেশি। কমফর্ট জোনে থেকে কখনো লড়াই করার প্রবণতা তৈরি হয় না। বিল গেটস এর ছেলে বিল গেটস এর মতো সফল হতে পারবে না। কারণ হল- কমফর্ট জোন! (দুই একজন ব্যতিক্রম ছাড়া)।
নেপোলিয়ান হিল এর একটা কথা আমার কানে সর্বদাই বাজে -- তিনি বলেছিলেন-- সাফল্য অর্জন করার কথা পরে ভাবো, আগে বলো-- সাফল্য অর্জনের জন্য তুমি জীবনে কি কি ত্যাগ করতে প্রস্তুত?
এই একটা কথা, আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এখন আমি বলি, সাফল্য তুমি আমার কাছে কি চাও, একবার হুকুম কর আমি সেটা ত্যাগ করতে সদা প্রস্তুত আছি। আমি জীবনে কি কি প্রতিনিয়ত ত্যাগ করে চলেছি, সে গল্প অবশ্যই সময় হলে বলব। তবে আমাদের ত্যাগের লিস্ট তোমাদের ধারণার বাইরে।
#5. প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখো:
যত শিখবে তত বুদ্ধি ধারালো হবে । শেখার প্রথম উপকরণ হল বই। আমাদের চেষ্টা করা উচিত কমপক্ষে মাসে একটা করে নতুন বই পড়া।
তোমার কোন সময় হয়তো ইচ্ছা হয়েছিল নাচ শিখতে, দেরি না করে নাচ টা এখনই শিখে নাও। বয়স কোন সমস্যা নয়, মনের বয়স সব সময় ষোলো ই ধরে রেখ। ছবি আঁকতে যদি ইচ্ছা করে তাহলে রং তুলি নিয়ে বসে পড়ো। আপন মনে হাবিজাবি যা খুশি আঁকো। নিজের ইচ্ছে মতো কিছুটা সময় কাটালে কাজ করার স্পৃহা জাগ্রত হয়।
#6.ঘুমাতে গিয়ে ফোন একদম নয়:
এখন বেশিরভাগ মানুষই ফোন নারতে চারতে ফোন হাতে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু নিয়ম হল ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে এক ঘন্টা আগে ইলেকট্রিক জিনিস কাছ থেকে দূূরে রাখতেে হবে। এবং ফোন পাশে নিয়ে ঘুমানো ভীষণ খারাপ। দিনের পর দিন এমন করলে মস্তিষ্কে ক্যানসার হয়।
ঘুমাতে যাওয়ার আগে সব সময় ভাল ভাল কথা মনে করতে হবে। ইতিবাচক ভাবনা ভাবতে হবে। প্রকৃতির কাছে, প্রতিটা মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে হবে। কম পক্ষে দশ মিনিট সুন্দর কথা গুলো মনে করে আনন্দের সহিত ঘুমাতে যেতে হবে।
#7.একই সাথে একাধিক কাজ কখনোই করতে যাবে না:
যে কাজটি তে হাত দিয়েছো, সেটা শেষ না করে, কোন পরিকল্পনা ছাড়াই অন্য কাজে যেতে নেই। এক সঙ্গে একাধিক কাজ করলে সব কাজ ই পন্ড হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে।
কাজের ধরন যদি এক হয়, তাহলে সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু কাজের ধরন ভিন্ন হলে জগাখিচুড়ি অবস্থা না হয়ে দাঁড়ায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
কারণ অনেক কাজ এক সঙ্গে করতে গিয়ে কোন কাজই যদি ভাল না হয়, পর পর কাজে যদি ব্যর্থতা আসতে থাকে তাহলে মানসিক স্থিতি নষ্ট হবে। এতে করে পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
#8.সময় পরিচালনা কর:
সাফল্য অর্জন করতে গেলে সময় কে সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে জানতে হবে। কখন কোথায় কতটুকু সময় ব্যয় করা প্রয়োজন সেই হিসাব নিজেকে রাখতে হবে।
চিত্র সূত্র- pixabay.com
জীবনে সাফল্য লাভ করতে হলে, এক সেকেন্ড সময় কেও দাম দিতে হবে। সকালে ওঠে সারাদিনের রুটিন ঠিক করে নিতে হবে। খাওয়া থেকে শুরু করে বই পড়া, ধ্যান করা, সোশ্যাল মিডিয়ায় কতটুকু সময় দেবো সেটা পর্যন্ত একটা নির্দিষ্ট পরিধি থাকবে।
মনে রাখতে হবে, সাফল্য কোন গাছের ফল নয়, যে গায়ের জোরে টুকুস করে পেড়ে নেবে। কঠিন নিয়মের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে তার পর তার ফল পাওয়া যাবে।
#9.কাজ শুরু করো এখুনি:
কাজ করার জন্য কোন দিনক্ষণ বাছতে হয় না। যদি কোন প্লান মাথায় আসে তাহলে সময় নষ্ট না করে, ভয় না পেয়ে কাজে নেমে পড়ো।
কখনো আজ নয়, কাল থেকে শুরু করব এই মনোভাব রাখবে না। কারণ যত বিলম্ব করবে তত মনে ভয় চেপে ধরবে। এই ভয় জীবন নষ্ট করে। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ সফল হতে পারত যদি ভয় নামক শত্রু তাঁর মনে বাসা না বাঁধত। তাই একটা একটা করে সিঁড়ি পার হওয়ার জন্য, প্রথম পদক্ষেপ টা বিলম্ব না করে ফেলে দাও।
চিত্র সূত্র- pixabay.com
#10.বড় স্বপ্ন দেখো:
স্বপ্ন এতো বড় দেখো যে নিজের বুকের মধ্যেই যেন একবার হলেও কেঁপে ওঠে। তুমি যদি স্বপ্ন
দেখতে জানো, এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে তৈরি করতে পার তাহলে সাফল্য তোমার কাছে আসতে বাধ্য। তবে ধৈর্য্য ধরতে জানতে হবে।
বেশিরভাগ মানুষেরই স্বপ্ন সত্যি হয় না, তার কারণ আমরা বড্ড তাড়াহুড়ো করি, কাজে নেমে। কাজ করছি না, চুপচাপ বসে আছি এটা সহ্য হচ্ছে, এদিকে যখন কাজে নামছি তখন সেই কাজে সময় দিতে আমাদের বড্ড কষ্ট হচ্ছে ,মনে হচ্ছে , এখুনি কেন সাফল্যের বিজয়টিকা কপালে জুটছে না। সাফল্য পেতে গেলে এই মনোভাব দূর করতে হবে ।
#11. আত্মবিশ্বাসী হও:
এটা আগেও অনেকবার বলেছি। আমি পারব এই বিশ্বাস টা যদি মন না থাকে তাহলে কখনোই কোন কাজ করা সম্ভব নয়।
আত্মবিশ্বাস হল সাফল্য অর্জনের চুম্বক। তাই এটি কে এড়িয়ে এক পাও চলা যাবে না।
#12.ভুল থেকে শিক্ষা নাও:
কাজ করতে গেলে হাজারো ভুল হবে, ভুল টা কোন ব্যপার নয়, তবে সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে চলতে হবে যাতে সেই ভুল আর না হয়।
স্যার টমাস আলফা এডিশন দশ হাজার বার ব্যর্থ হয়ে তার পর জীবনে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি বলতেন, আমি দশ হাজার বার ব্যর্থ হয়নি, আমার কাজটি শিখতে সময় লেগেছে দশ হাজার বার।
#13.স্বাস্থ্য কে সব কিছুর আগে প্রাধান্যে দাও:
স্বাস্থ্যই জীবনের মূল সম্পদ, তোমার যতই অর্থ থাকুক না কেন স্বাস্থ্য যদি ভালো না থাকে তাহলে সব মাটি।
পপ তারকা মাইকেল জ্যাকসন প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক ছিলেন, তাঁর ইচ্ছা ছিল দেড়শো বছর বাঁচার। তিনি তার জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করতেন কিন্তু স্বাস্থ্য কে অবহেলা করে। শুধু অর্থ যে মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে না তার জ্লন্ত উদাহরণ উনি।
#14.কাজ করো মনোযোগ সহকারে:
জীবনে সাফল্য লাভ করতে হলে, যে কাজ যখন করতে হবে তখন সেই কাজে মন প্রাণ উজাড় করে দিতে হবে। সেই কাজে যেন কোন রকম গাফিলতি না থাকে সেটা দেখতে হবে।
#15. একটা ব্যাক্তিত্ব তৈরি করো:
তোমার কথা বলার মধ্যে ও যেন একটা আর্ট থাকে, চলা ফেরা থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়া সব কিছু তেই যেন তোমার নিজস্ব একটা ছাপ থাকে, যেটা কারো সঙ্গে মিলবে না।
সাফল্য অর্জন কারি প্রতিটি ব্যক্তির আলাদা আলাদা ব্যক্তিত্ব থাকে। কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে যেটা কারো সঙ্গে মিলবে না।
উপসংহার
মোট কথা জীবন যতক্ষণ একটা পেয়েছি তাহলে সেই জীবন কে নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করব না কেন? চেষ্টা করতে দোষ কোথায়? সাফল্য কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয় , ইচ্ছা করলে এটা যে কেউ অর্জন করতে পারে।
তুমি গরীব কি বড় লোকের সন্তান তাতে কিছু যায় আসে না, নিজেকে ঝাঁকিয়ে তুলতে হবে, নিজের প্রচেষ্টাই বড় হব, এটাই মূল কথা।
প্রেসজিৎ এর " ওয়ান" সিনেমার ডাইলগের কথা সবার মাথায় রাখা উচিত---
গরীব হয়ে জন্মানোটা পাপের নয়; গরীব থেকে মরে যাওয়া টা পাপের। গরীব হয়ে জন্মেছি সেটা বাপের দোষ; কিন্তু গরীব অবস্থায় মরলে সে দায় নিজের উপরে বর্তায়।
ধন্যবাদ।
চিত্র সূত্র-- pixabay.com
তথ্যসূত্র- ডেল কার্নেগি র গ্রন্থ এবং নিজস্ব মতামত।
TAGS, success in life, জীবনের সফলতা, সাফল্য লাভের উপায়, আত্মা উন্নয়ন ।



কোন মন্তব্য নেই: