হতাশার কারণ এবং যে উপায়ে হতাশা কাটানো যায়

হতাশার কারণ:

                  মানসিক অবসাদের দিক দিয়ে ভারত এখন বিশ্বের মধ্যে প্রথম। কম বেশি এখন প্রতিটা ঘরে মানসিক অবসাদে নিমজ্জিত ব্যক্তির সন্ধান মেলে।বর্তমান আধুনিক জীবনের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে মানুষ এখন হতাশাগ্রস্ত। প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যে বিশেষ কিছু না কিছু চাহিদা থাকে, কিন্তু কোন মানুষেরই জীবনের সমস্ত চাহিদা পূরণ হয় না। এই চাহিদার অপ্রাপ্তির থেকে মনের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয় ।

হতাশা কাটানোর উপায়
                                   হতাশাগ্রস্ত 

                    মানুষের চাওয়া পাওয়া র পরিধি দিন দিন বেড়েই চলেছে।এবং তার জন্য সমাজের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে মানুষ এখন ইদুড় দৌড় দৌড়াছে।যার প্রাপ্তি হিসাবে জুটছে,হতাশা এবং অবসাদ। বর্তমানে মানুষ যেন হাসতেই ভুলে গেছে, এখন বেশিরভাগ মানুষের মুখে একরাশ বিষাদ এবং বিরক্তি দেখা যায়।

                 কিন্তু মুক্ত মনে বেঁচে থাকতে গেলে, মনের জটিল চিন্তা ভাবনা কে আগে দূর করতে হবে। সব কিছু তেই ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে শিখতে হবে। কারণ নেতিবাচক চিন্তা কেবল ধ্বংস করে, কোনও কিছু সৃষ্টি করতে পারে না।

               শারীরিক পরিশ্রম কখনোই মানুষ কে ক্লান্ত করে না।মানুষের মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয় অতিরিক্ত ভাবাবেগের ফলে। আমরা যে অবসাদে ভুগি তার অধিকাংশেরই উৎস হল আমাদের মন।

                  সুন্দর ভাবে বাঁচতে হলে, সন্দেহহীন ভাবে, অতিরিক্ত আবেগ কে বিসর্জন দিয়ে হীনমন্যতা থেকে বেড়িয়ে এসে বাঁচ তে হবে।প্রতিটা মানুষের মধ্যে একটা শিশুসুলভ মন আছে, আমরা পরিস্থিতির অজুহাত দিয়ে তাকে চাপা দিয়ে রাখি। সুস্থ ভাবে বাঁচ তে গেলে ঐ শিশুসুলভ মন কে জাগিয়ে তুলতে হবে।  যে কোনও পরিস্থিতিতে যেন মুখে এক টুকরো হাসি থাকে,এবং মনে রাখতে হবে অপরিসীম সাহস।
                      হতাশা দূর করে মুখে হাসি 

                মানসিক অস্থিরতা হল জীবনের অধিকাংশ কষ্ট ও দুর্ভোগের কারণ। মানুষ অনন্ত শক্তির আঁধার। মানুষ তাঁর শক্তি সম্পর্কে অবগত নয়, আমরা আমাদের শুভবুদ্ধির পাঁচ শতাংশ ও  ব্যবহার করি না। আসলে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটাই অজানা।ফলে জীবনে কোনও সমস্যা আসলে সেই সমস্যার সমাধানের রাস্তা না খুঁজে আমরা হতাশার চাদরের আশ্রয়ে নিমজ্জিত হই। জীবনে আসা সমস্যা টি কোনও সমস্যা নয়,আমরা সেই সমস্যার প্রতি যে দৃষ্টি ভঙ্গি নিক্ষেপ করি সেটাই হল সমস্যা।

            আমরা জীবনে যেটা পায়, সেই পাওয়া জিনিস টার প্রতি গুরুত্ব কম দিই,যেটা পায় না, সেটা পাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠি ফলে পাওয়া জিনিস টা তার মূল্য হারায়। আমরা অল্পতে খুশি হই না, কিন্তু ছোট্ট ছোট্ট খুশি গুলো যদি একত্রিত করা যায়, তাহলে দেখা যাবে জীবনে যা আছে সেটা কম কিছু নয় । এবং সব সময় মানসিক ভাবে শক্তিশালী থাকতে আরও পড়ুন-----


           জীবন যদি কখনো কোনও খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়, তাহলে এটা সব সময় মাথায় রাখতে হবে যে, এই পৃথিবীতে আমিই একমাত্র ব্যক্তি নই,যাঁর জীবনে এমন পরিস্থিতি এসেছে। 

              পৃথিবীর মহান মহান ব্যক্তির দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে যে, তাঁদের আজকের সাফল্যের পিছনে আছে জীবনের সঙ্গে অসম্ভব কঠিন লড়াই। আমরা সাফল্য অর্জনকারী ব্যক্তির বর্তমান দেখি, অতীত দেখি না। তাঁদের অতীতের দিকে নজর দিলে, কখনো কোনও ব্যক্তি হতাশা, অবসাদে নিমজ্জিত হবে না।

        ডেল কার্নেগি বলেছেন----
 
                   "মানুষ যদি তাঁর নিজের মনের ওপর পূর্ণ অধিকার বজায় রাখতে সক্ষম হয়, তাহলে তাঁর যা যা পাওয়ার যোগ্যতা আছে, সেই সব কিছুই সে পেতে পারে।মানুষের নিজের অন্তরের চিন্তা ধারার প্রতিফলন ই একটি মানুষের ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলে।"

             আবার যদি সেই মানুষ টাই নেতিবাচক চিন্তা ভাবনায় নিমগ্ন থাকেন তাহলে তাঁর জীবনের মোড় নেতিবাচক দিকেই যাবে। বাইরে কিছু নেই সব কিছু আমাদের ভাবনার মধ্যে। আমরা সচেতন মনে যেটা ভাবি আমাদের অবচেতন মন সেই রাস্তা অনুসরণ করে। 

              যাঁরা জীবনে ব্যর্থ হন,তাঁরা অধিকাংশই ওই ব্যর্থ তার মধ্যেই বাস করে। যে কোনও প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তাঁরা কেবল হতাশার কথাই বলে।ফলে হতাশা তাঁদের পিছু ছাড়ে না। সমস্ত প্রতিবন্ধকতা কে পাশ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব, যদি আমাদের ভাবনা টা সঠিক হয় তবেই। প্রত্যেক প্রতিকূলতার মধ্যেই বৃহত্তম কল্যাণের বীজ লুকিয়ে আছে।এখানে দরকার শুধু একটু  ধৈর্যের। 

               মানুষের জীবনে হতাশা আসার কারণ:


         ■  কারও জীবন থেকে ভালোবাসা হারিয়ে গেলে,সে নিজেকে এই সমাজ, পরিবার পরিজন থেকে  গুটিয়ে নেয়।তখন তাঁর জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা চলে আসে। 
       এই সময় তাঁর পাশে সাহস দেওয়ার মতো কাউকে ভীষণ প্রয়োজন।যে তাঁকে প্রেরণা দিতে সক্ষম হবে।সব থেকে মানুষ বেশি হতাশায় জীবন থেকে প্রেম হারিয়ে গেলে। এ ধাক্কাটা সহজে কেউ হজম করতে পারে না।


              ■ একঘেয়েমি এবং অসন্তোষ এর কারণেও মানসিক অবসাদের সম্ভবনা দেখা দেয়। একি কাজ দিনের পর দিন করলে এমনটা হতে পারে।

এই জন্য কোনও না কোনও সৃজনশীল কাজে নিজেকে  যুক্ত থাকা প্রয়োজন।

          ■ আশা রাখা ভালো, তবে উচ্চাশা জীবনের জন্য ক্ষতিকারক। উচ্চাশা জীবন কে নরক বানিয়ে দিতে পারে। কেউ হয়তো জীবনে বিশাল কিছু করার ইচ্ছা মনে পোষণ করে কিন্তু কোন কারণে হয়তো তাঁর ইচ্ছাা টা পূরণ হল না। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই হতাশয় ভোগে। তাই ক্ষষমতা বুঝে পরিকল্পনা করতেে হয়, এবং একদিনে নয়, অস্তে অস্তে এগিয়ে যেতে হয়।


            ■ .সুনিদ্রা না হলেও মানসিক অবসাদ আসে। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালে ধ্যানে নিমগ্ন হতে হবে। শারীরিক কসরত করতে হবে।

              ■ কোনও কাজে বার বার ব্যর্থ হলে মানুষ হতাশায়, অবসাদে ভোগে। এর থেকে মুক্তির উপায় হল একমাত্র ইতিবাচক মনোভাব। জীবন টা যে খুব সুন্দর এটা ভাবতে হবে।জীবনে ব্যর্থ তা আসতেই পারে। রাতের পর সকাল আসা টা কেবল সময়ের অপেক্ষা।আর সকাল আসার মূহুর্তে, মানে ভোর টা একটু বেশি অন্ধকার ই হয়। তাই একটু ধৈর্য ধরতে হবে।

                ■ পরিমিত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ না করলেও, মানসিক অবসাদ আসার সম্ভাবনা রয়ে যায়।কারণ শরীর সুস্থ না থাকলে মন সুস্থ থাকে না।ফলে কোনও সুস্থ ভাবনাও মাথায় আসে না। তাই পুষ্টিকর আহার গ্রহণ করা উচিত।

                ■ জীবন কে সুস্থ রাখতে গেলে, জীবনে একটা ছন্দবদ্ধ ভাব থাকা প্রয়োজন। ছন্নছাড়া জীবন কখনো সুস্থ জীবন হতে পারে না। আর এই ছন্নছাড়া জীবনেই একটা সময়ের পর হতাশায়  নিমজ্জিত হয়।


              ■  আমাদের জীবনে থাকা প্রতিটা সম্পর্কের সঠিক মূল্য দেওয়া উচিত।সমস্ত সম্পর্কের একটা আলাদা আলাদা মর্যাদা আছে। কোনও সম্পর্কেই অবহেলা করা উচিত নয়। যাঁর কাছে সম্পর্কের কোনও মূল্য থাকে না,  সে একটা সময়ের পর জীবন নামক নৌকা টির খেই হারিয়ে ফেলে। ফলে তাঁর ভরাডুবি নিশ্চিত। সম্পর্কের মধ্যে দোদুল্যমানতা  হতাশার সৃষ্টি করে ।

            হতাশা কাটানোর উপায়:


            #1. হতাশা আসার কারণ খুঁজুন:


                 কি কারণে হতাশা মনের মধ্যে প্রবেশ করেছে সেটা আগে খুঁজে বার করুন।হতাশার কারণ জানতে পারলে সেখানেই অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।

         এর পর সেই কারণ টি একটা খাতায় লিখুন এবং সেখানে আপনার কি করণীয় সেটা খুঁজুন। যদি সমস্যা টা আপনার দ্বারাই সমাধান করা সম্ভব হয় তাহলে একটু সময় নিয়ে প্লান করে সমাধানের রাস্তা বার করুন। আর আপনার যদি সেখানে কিছু করণীয় না থাকে তাহলে সব কিছু সময়ের হাতে ছেড়ে দিন।

          কারণ সমস্যা নিয়ে হা- হুতাশ করে কোন লাভ নেই, যেটা ঘটার সেটা ঘটবেই তাই হতাশা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে সেই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে একটি সুস্থ জীবনে ফিরে আসা যায় সেই চেষ্টা করুন।


               একদা একটি কলেজে পড়া ছাত্রের জীবনে হঠাৎ ই হতাশা প্রবেশ করেছে।সে কিছুতেই আর পড়াশোনায় মন দিতে পাচ্ছে না।তাঁর কলেজের স্যার সেটা লক্ষ করে তাঁকে একদিন কাছে ডাকলেন এবং তাঁর সঙ্গে মিনিট পনেরো মতো কথা বললেন। সেই আলোচনা পর সেই ছাত্রের জীবনের মোড় ঘুরে গেল।

         তাঁর সমস্ত কথা শুনে তাঁর স্যার জানালেন যে, 

    ' হতাশা হয়ে পড়াটা এক ধরনের বদ অভ্যাস মাত্র'

        তিনি এই বদ অভ্যাস পরিবর্তন এর তিনটি নিয়ম বলে দিয়েছিলেন-----

    ক) সংক্ষেপে তোমার সমস্যা টা কি তা ভেবে দেখ।

     খ) সমস্যার সঠিক কারণ সঠিক ভাবে নিরূপণ কর।

      গ) সময় নিয়ে বা সম্ভব হলে তৎক্ষণাৎ সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে কার্যকরী এবং গঠনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ কর।


             স্যারের কথা মতো চলে সে তাঁর হতাশার কারণ খুঁজে পেল।আসলে সে খুব ভালো ছাত্র ছিল।কিন্তু তবুও ফিজিক্স এ ফেল করেছে।আর এটাই সে কিছুতেই মানতে পারছিল না। পরে সে বুঝতে পারল তাঁর ফিজিক্সে ফেল করার কারণ হল-- তাঁর ঐ বিষয়টিতে যথেষ্ট আগ্রহের অভাব।

           পরে অবশ্য সে পড়াশোনায় যথাযথভাবে মনোনিবেশ করে কৃতকার্য হল।

        তাই মনের মধ্যে হতাশা এলে তার কারণ খুঁজে বার করাটা খুব দরকার।তাহলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।


             #2. আপনার লক্ষ্য স্থির করুন:


                  লক্ষ্য  ছাড়া কখনো কোন স্থানে পৌঁছানো যায় না। আপনি যদি না জানেন কোথায় যাবেন তাহলে সেখানে যাওয়া টা জাস্ট  অসম্ভব।

           আপনি ট্রেনের টিকিট কাউন্টারে গিয়ে টিকিট চাইলেন কিন্তু কোথায় যাবেন সেটা বললেন না, তাহলে তাঁর পক্ষে আপনাকে টিকিট দেওয়া জাস্ট অসম্ভব হয়ে পড়বে।

          ঠিক তেমনি আপনি যদি না জানেন আপনার জীবনের লক্ষ্য কি তাহলে আপনি তার প্রস্তুতি নেবেন কিভাবে?

           আপনি চান হয়তো চাকরি করতে কিন্তু আপনি কি চাকরি করবেন তার জন্য কিভাবে প্রস্তুতি নেবেন, কতক্ষণ পড়বেন, কিভাবে পড়বেন  এই সব কিছু আপনাকে আগের থেকে ঠিক করতে হবে। এবং সেই অনুসারে খাটতে হবে তার পর আপনি সফল হবেন।

        কিন্তু আপনি চান চাকরি তবে কোন পরিকল্পনা ছাড়াই এগিয়ে যাচ্ছেন তাহলে তো আপনি কখনোই সফল হবেন না, এভাবে চললে আপনি ব্যর্থ হবেন এবং তখন আপনার জীবনে হতাশা প্রবেশ করবে।


          #3. নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন:


                 হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ার আর একটি  মূখ্য কারণ হলো নিজের উপর বিশ্বাস না থাকা। যে নিজে বিশ্বাসই করে না সে কিভাবে জীবনে সফলতা অর্জন করবে!

            আমি পারব, আমি সব কিছু করতে সক্ষম, আমার জীবনে সব কিছু খুব ভালো হবে এই বিশ্বাসটা না থাকলে আপনাকে প্রতি পদে ব্যর্থ হতে হবে। কারণ ভালো কিছু না ভাবলে তাঁর জীবনে ভালো কিছু আসে না। আর এই ভাবনায় যেন থাকে অটুট বিশ্বাস তাহলে ই জীবনে সব কিছু অর্জন করা সম্ভব।

         কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আমরা কোন কাজে নামার আগে বা করার আগে শুধু তার নেতিবাচক দিকটার কথা আগে ভাবি। পারব তো? হবে তো? এটাই মনের মধ্যে বাসা বাঁধে ফলে আকর্ষণ যখন করছি খারাপের তখন খারাপ না এসে কি পারে!

        আর একটা দোষ হলো, কোন কাজে নামার আগে যে মানুষ গুলো সে কাজে ব্যর্থ হয়েছে তাঁদের দিকে তাকায় এবং ভাবি অমুক তো পারে নি আমি পারব!

        আমরা এটা ভাবি না যে, তাঁর কাজের মধ্যে নিশ্চয়ই কোন ভুল ছিল তাই সে পারেনি। কিন্তু আমি পারব। এই বিশ্বাস টা থাকলে কেউ কোন কাজে অসফল হবে না আর হলেও হতাশা হবে না। 

         কোন কাজে হেরে গেলে একবার নয়, বারবার চেষ্টা করতে হয়। এ বিষয়ে টমাস আলফা এডিশনের কথা স্বরণে রাখা প্রয়োজন।  যে মানুষটি বারবার হেরে 
 গিয়েও হতাশা হন নি।এবং তার জন্যই তাঁর নাম    সারাজীবন ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

            #4.নিজের কর্মপদ্ধতি লিখে রাখুন:


               আপনি জীবনে কি কি অর্জন করতে চান, আপনি নিজেকে কোথায় দেখতে চান, আপনার কাজের কেমন ধরণ হবে, সেই অনুযায়ী কিভাবে এগিয়ে যেতে হবে এই সব কিছু লিখুন।

হতাশা কাটানোর উপায়
                              কাজের নোট

                আপনি  যদি হতাশা ও অনুভব করেন তাহলেও আপনি আপনার কাজের সমস্ত বিবরণ লিখে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকলে একটা সময়ের পর আপনার মধ্যে কর্মচঞ্চলতা চলে আসবে। জীবন থেকে সমস্ত হতাশা মুছে যাবে।  হতাশা জীবনের একটি অভিশাপ। এর থেকে বার হতে না জানলে মানুষ ডিপ্রেশন এ চলে যায়।  ডিপ্রেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে  আরও পড়ুন--------



            #5.নিজের কাজের প্রশংসা নিজে করুন:


            এটা ভীষণ প্রয়োজন প্রতিটা মানুষের। নিজের কাজের প্রশংসা নিজে করলে মনের মধ্যেে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। বিশেষ করে আপনার মনে যদি কোন রকম  হতাশার বিন্দুমাত্র উঁকি দেয়  সেই অবস্থায় নিজের ছোট্ট ছোট্ট কাজের প্রশংসা নিজে করুন।

         আর এই সময় যতটা পারা যায় যাঁরা আপনাকে ডিমোটিভেট করার চেষ্টা করে তাদের কাছ থেকে শতযোজন দূরে থাকার চেষ্টা করুন। কারণ এই সমস্ত মানুষের কথা জীবনে চরম ক্ষতি ডেকে আনে। কিছু কিছু মানুষ আছে যাঁরা তাঁদের স্বভাব কখনোই পাল্টাবে না। তাই  তাঁদের কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় বুদ্ধিমানের কাজ।

           #6. একাকী কিছুটা সময় নিজের সঙ্গে কাটান:

              যদি কখনো নিজের কাজ, চারিদিকের পরিবেশ, মানুষ জন সব কিছুতেই বিরক্তি আসে তাহলে সেই  সময়ে নিজেকে কিছু দিনের জন্য সব কিছুর থেকে বার করে একাকী নিজের সঙ্গে সময় কাটানো  উচিত।

          আপনি যদি জোর করে মনে বিরক্তি আসার সত্ত্বেও  নিজেকে সেখানেই আটকে রাখেন তাহলে তখনই মনে হতাশা আসে। এর কারণ অতিরিক্ত কাজের ফলে মনে একঘেয়েমি প্রবেশ করেছে।

        কিছুদিন বাইরের মুক্ত পরিবেশ ঘুরে এলে মনটা ফ্রেস হয়ে যাবে এবং তখন সব কিছু আবার ভালো লাগবে।

              #7. পরিকল্পনা মাফিক চলুন:


                    পরিকল্পনা ছাড়া একটা দিন ও অতিক্রম করা উচিত নয়। ছন্নছাড়া কাজ ই ছন্নছাড়া জীবন তৈরি করে। যাঁরা হতাশায় ভুগছেন তাঁদের নিয়ে যদি সার্ভে করা যায় তাহলে দেখা যাবে তাঁদের কাজের মধ্যে কোন পরিকল্পনা নেই, জীবন নিয়েও কোন প্লাণ নেই। 

              আপনাকে কোন হতাশা ই ছুঁতে পারবে না যদি আপনি সব কিছু গুছিয়ে,  প্লান করে কাজ করেন তবে।


              #8. হতাশা থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা না করে তার থেকে বার হওয়ার রাস্তা খুঁজুন:


               যুদ্ধের ময়দান থেকে পালিয়ে গেলে সে কখনোই বীর যোদ্ধা হয় না। সেই বীর যোদ্ধা হয় যে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ টা করে। 

              পৃথিবীতে এমন কোন সমস্যা নেই যার কোন সমাধান নেই। প্রতিটা সমস্যা সমাধান কে পিছনে নিয়ে হাজির হয়। দরকার শুধু একটু ধৈর্য্য ধরে সমস্যা টা বোঝার। 

           অনেক আছে যারা জীবনের সঙ্গে লড়াই না করেই হার স্বীকার করে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নেয়। এটা কি কোন সঠিক চিন্তা ধারা হলো? জীবন নিয়ে পালিয়ে গিয়ে কি লাভ? মানব জীবন একটাই পেয়েছি তাই তাকে  হেলায় নষ্ট না করে কাজে লাগাতে হবে। আজ দুঃখ আছে একটু ধৈর্য্য ধরল কাল ঠিক নতুন সূর্য উদিত হবে। 

হতাশা কাটানোর উপায়
                                  সূর্য উদয় 
 
            
                               উপসংহার 

       তাই হতাশার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সঠিক নিয়মে জীবন যাপন করা প্রয়োজন।আমি ভালো আছি কি খারাপ আছি সেটা একমাত্র আমি ই বুঝতে পারব। তাই কোনও রকম দুশ্চিন্তা মাথায় আসলেই তাকে ইতিবাচক চিন্তা দিয়ে দূর করতে হবে। যেমন জলের কল খারাপ হয়ে গেলে সেটা কে তো আমরা সারাই। মন ও ঠিক তেমনি, একে ভালো রাখতে গেলে সঠিক চিন্তা ধারা পোষণ করতে হবে। তাহলেই সব কিছু সুন্দর হবে।

            কথায় বলে, সুস্থ মন, সুস্থ জীবন।


চিত্র সূত্র- pixabay.com 

তথ্যসূত্র সংগৃহীত 

Tags, হতাশা কাটানোর উপায় 

 ধন্যবাদ 😊

  









২টি মন্তব্য:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.