কোন দশটি স্বভাব একজন মানুষের পতনের কারণ হয়?

 মানুষের পতনের মূল কারণ:

                                 পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য দিন রাত লড়াই করে চলেছে এই পৃথিবীর সঙ্গে।তবুও পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে বেশি ভাগ মানুষই ব্যর্থতার কোলে ঢলে পড়ে!তার কারণ হল মানুষ তাঁর নিজ স্বভাব গুনে যেমন সাফল্য অর্জন করে ঠিক তেমনই আবার নিজের কিছু কিছু স্বভাবের জন্য নিজের পতন নিজে ডেকে আনে।একবার কোন মানুষের জীবনে পতন নেমে এলে সে সেখান থেকে আর সহজে বেরিয়ে আসতে পারে না।

                 আমাদের প্রতিটি মানুষেরই এই পৃথিবীতে আসার একটা নির্দিষ্ট কারণ আছে। কিন্তু আমরা সেই কারণ টাকে খুঁজতে চাই না বা জানতে চাই না।আমরা গড়পড়তা হয়ে বেঁচে থাকতে ভালোবাসি।সেই এক পাল ভেড়ার গল্পের মতো জনতার মাঝে নিজের মুখ ঢেকে ফেলি।
পতনের কারণ
               চিত্রসূত্র-pixabay.comপতনের কারণ

                                 পৃথিবীর মধ্যে মাত্র পাঁচ শতাংশ মানুষ জীবনে সাফল্য অর্জন করে আর বাকি পঁচানব্বই শতাংশ মানুষ জীবনে ব্যর্থ হয়।তার কারণ হল নিজের জীবন সম্পর্কে  সঠিক জ্ঞানের অভাব। এবং চারিদিকে ব্যর্থ মানুষের হাতছানি।

                         তুমি যদি এই পৃথিবীতে থাকার কিছু কারণ পেশ করতে পার, কেনো এই পৃথিবীতে থাকতে চাও সেটা জানো তাহলে তুমি তোমার জীবনকাল বাড়াতে সক্ষম হবে।যদি তুমি দীর্ঘ জীবন ধরে বেঁচে থাকতে চাও, তাহলে তোমার জীবনধারাতে অনেক পরিবর্তন আনতে হবে।কিছু কিছু স্বভাব চিরতরে ত্যাগ করতে হবে ।  

                 একটি যে কোন খেলার মাঠে সেই সমস্ত খেলোয়াড়ই টিকে থাকে যাদের পারফরম্যান্স ভাল।বাকি খেলোয়াড়রা কেবল সংখ্যা হয়ে বেঁচে থাকে।

                 জীবন যুদ্ধে ও ঠিক এই কথাটিই প্রযোজ্য।তুমি যদি তোমার মানসিক কাঠামো কে উন্নত করতে ব্যর্থ হও তাহলে তোমার পতন অনিবার্য।একটি মানুষের জীবন যাত্রা উন্নত হবে কি হবে না, সে নিজেকে শ্রেষ্ঠতম আসনে অধিষ্ঠিত করতে পারবে কি পারবে না, এই সব কিছু নির্ভর করে তাঁর মানসিক প্রক্রিয়ার উপর।

              আপনি মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে চাইলে আরও পড়ুন-------

 
               একজন মানুষ তাঁর বহুবিধ স্বভাবের কারণে জীবনে পতন ঘটায়।আজ এখানে আলোচনা করব-

একজন মানুষের জীবনে পতন নেমে আসার দশটি কারণ:

 #1.অলসতা।

#2.দুশ্চিন্তা।

#3.হিংসা।

#4.রাগ।

#5.ভয়।

#6.নেতিবাচক চিন্তা।

#7.বদমেজাজ।

#8.অতিরিক্ত লজ্জা।

#9.অহংকার।

#10.লোভ।

 

               #1.অলসতা:

                       "কর্মঠ লোকের পায়ের নীচে পৃথিবী                                 কর্মহীন কে নির্জন পথে চলতে হয়।"

                              
                           অলস মানুষ আর মৃত মানুষের মধ্যে বিশেষ কোন পার্থক্য নেই।  অলস মানুষের পতন যে অবশ্যম্ভাবী সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।কথায় বলে অলস মস্তিষ্ক হল শয়তানের কারখানা । অলস মানুুষ কেবল চিন্তা করেই জীবন টা পার করে দেয়।তাঁরা কাজেতে শূন্য।
পতনের কারণ
                 চিত্রসূত্র-pixabay.com

              যে কর্ম করে জীবনে কঠিন পরিশ্রম করে, এই পৃথিবী তাঁর পদতলে।কর্ম তাঁর জীবনের প্রতিটি আশা পূরণ করে।কিন্তু কর্মহীন মানুষ কে একাকী পথ চলতে হয়।কারণ ব্যর্থ মানুষের কেউ সঙ্গী হতে চায় না।       

                অলস মানুষ সর্বদাই অজুহাত এর শরণাপন্ন হয়।জীবনের সব ব্যর্থতার পিছনে অজুহাত খাড়া করে।কিন্তু এমন  প্রচুর মানুষ আছে যাঁদের দেখে অলস  প্রকৃতির মানুষের  লজ্জা পাওয়া উচিত।

                 একবার হ্যারল্ড ডিসি নামে এক ভদ্রলোক রাস্তার ফুটপাত ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন।তিনি মার্চেন্টস ব্যাঙ্কে যাচ্ছিলেন।কারণ তাঁর একটি ছোট্ট মুদির দোকান ছিল যেটা বন্ধ হয়ে গেছে।তাঁর সমস্ত সঞ্চয় ফুরিয়ে গেছে।তাই সে ব্যাঙ্ক থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে চাকরি খুঁজতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

                সেই ভদ্রলোক তখন প্রচন্ড হতাশাগ্রস্ত ছিল।কিন্তু সেদিন মাত্র দশ সেকেণ্ডের একটি ঘটনায় তাঁর পুরো জীবন টাই পাল্টে যায়। 

               তাঁর পাশ দিয়ে একটি লোক চাকা লাগানো কাঠের গাড়ীতে যাচ্ছে।সেই লোকটির হাত নেই, পা নেই। তাঁর হাতে রয়েছে কাঠের যন্ত্র। সেই অচল ভদ্রলোক টি এই ভদ্রলোক টির দিকে তাকিয়ে একটু মৃদু হেসে বলল--

               সুপ্রভাত, আজ সকালটা কি দারুণ তাই না?

সেই হাত পা বিহীন পঙ্গু লোকটার মুখের দিকে তাকিয়ে হঠাত্ নিজেকে ভীষণ ধনী মনে হল।যে মানুষ টার একটা হাত পা না থাকার সত্ত্বেও সে যদি জীবন নিয়ে খুশি থাকতে পারে, শারীরিক অক্ষমতার সত্ত্বেও মুখে হাসি রাখতে পারে, তাহলে আমরা ছোট একটু একটু ঘটনায় কেনো ভেঙ্গে পড়ব?

                    আমাদের দুটি হাত আছে যে হাত দিয়ে আমরা যে কোন কাজ করতে পারি, দুটো পা আছে সেই পা দিয়ে যখন তখন যে কোন স্থানে যেতে পারি।তাহলে আমরা অলসতার কবলে, দুঃখের কবলে পড়ি কি করে!

                 আসলে আমাদের যা আছে তা নিয়ে আমরা চিন্তা করি না, আমরা চিন্তা করি আমাদের যা নেই তা নিয়ে।এটা প্রতিটা মানুষের স্বভাব

                সেদিনের ঐ ঘটনার পর সেই ভদ্রলোক ব্যাঙ্ক থেকে আরো বেশি ঋণ নিল।ঐ পঙ্গু মানুষ টাকে দেখে তাঁর মনে আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল।এবং সে তাঁর মনের জোরে নতুন চাকরি ও পেয়ে গেল।সে এখন আর  জীবনে আসা কোন ঘটনা নিয়েই দুঃখ বোধ করে না।কারণ সে জীবনে কিভাবে সমস্যার মোকাবিলা করতে হয় সেটা বুঝতে সক্ষম হয়েছে।

              ডেল কার্নেগির কথায়----

  "সত্যি বলতে কি আমাদের সম্প্রতি আলিবাবার রত্ন  ভাণ্ডারের চেয়েও দামী।"

      কি বিশ্বাস হচ্ছে না?

যদি বলি কুড়ি লক্ষ ডলার দেব,আপনি কি আপনার চোখ দুটো বিক্রি করতে পারবেন? পা দুটোর জন্য কত টাকা নেবে? হাত দুটো? শ্রবণ শক্তি?

              এমন ভাবে আপনার সমস্ত সম্পদ কে যোগ করুন।তারপর দেখবেন রকফেলার,ফোর্ড আর মরগানরা যে সোনা সঞ্চয় করেছে তা দিয়েও আপনার সম্পত্তি কেনা যাবে না।----
                                  ডেল কার্নেগি।

               তাই জীবন নিয়ে হতাশা বন্ধ করুন, অভিযোগ, অজুহাত দেখানো বন্ধ করুন মন থেকে অলসতা ঝেড়ে ফেলুন।নিজেকে পতনের হাত থেকে বাঁচান।অলস জীবনেে প্রবেশ করে নিজের জীবনে পতন ডেকে আনবেন না।

  

                      #2.দুশ্চিন্তা:


             ড:  অ্যালেক্সিস ক্যারেল  বলেন---
      
          "দুশ্চিন্তার সঙ্গে মোকাবিলা কি করে করতে হয় যারা এ কথা জানে না,তাদের তরুণ বয়সেই মৃত্যু ঘটে।"


                           দুশ্চিন্তা মানুষের জীবনে পতনের অন্যতম প্রধান কারণ।যে মানুষ অতিরিক  দুশ্চিন্তা করে তাঁর স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।কিন্তু বাস্তবিক অর্থে  দেখা যায় বেশি  ভাগ মানুষই সঠিক কারণ ছাড়াই দিনের পর দিন দুশ্চিন্তা করে জীবন নষ্ট করে।

             তাই যদি তুমি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ব্যক্তি হও তাহলে প্রথমে এটা দেখ তুমি যে বিষয় টি নিয়ে চিন্তা করছো সেটা কতটা বাস্তবিক?

              যদি তোমার দুশ্চিন্তার সঠিক কারণ ও থাকে তাহলে বাস্তব কে মেনে নিয়ে এগিয়ে চল ,তখন পরে দেখবে কত তুচ্ছ কারণে তুমি মাত্রাতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করে নিজের জীবনে বিপর্যয় ডেকে এনেছো।

            দুশ্চিন্তা শুধু আমাদের কর্মক্ষমতা ই নষ্ট করে না, এ বিভিন্ন রোগের ও বাহক।যেমন দুশ্চিন্তা করলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, ডায়াবেটিস হয়, থাইরয়েড বয়ে আনে শরীরের মধ্যে। 

                    এই প্রসঙ্গে হ্যারি এমার্সন ফসডিক--এর একটি রূপকধর্মী গল্প এক্ষেত্রে খুবই প্রাসঙ্গিক---

                আমেরিকায় কলোরাডো অঞ্চলের 'লং' পাহাড়ের সানুদেশে একটি  মহীরূহের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়, যাঁর সম্বন্ধে  প্রকৃতি বিজ্ঞানীরা বলেন যে,

           এখানে প্রায় চারশো বছর ধরে একটি গাছ বিরাজমান ছিল।এই গাছটির উপর দিয়ে বিগত চারশো বছর ধরে প্রকৃতির অসংখ্য অত্যাচার  চলেছে-- বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে চোদ্দবার, অগণিতবার তুষারধ্বসের আঘাত সয়েছে সে নীরবে।

            প্রচন্ড ঝড়ের তাণ্ডব যে কতবার গাছটির ওপর দিয়ে বয়ে গেছে তার কোন হিসেব নেই ।অদম্য প্রাণশক্তির জোরেই সে এত অত্যাচার সহ্য করেও দাঁড়িয়ে ছিল।

       কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে ভূপতিত হল কী করে?

                  একদিন দলে দলে অতি ক্ষুদ্রকায় কীটের দঙ্গল এগিয়ে এল গাছটার দিকে।তারপর সেই কীটের দল অস্তে অস্তে এক এক করে গাছটির দেহের ভেতরে প্রবেশ করে তারা কুরে কুরে খেয়ে শেষ করে দিল  তার অদম্য প্রাণশক্তি কে ।

                এতো বছর ধরে প্রকৃতির বিপর্যয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে এসে শেষ পর্যন্ত মহীরূহের  পতন ঘটল এক নগণ্য কীটের কাছে।

            দুশ্চিন্তাও মানবজীবকে ঐ কীটের মতো কুরে কুরে খেয়ে ফেলে। এবং জীবন নষ্ট করে।
পতনের কারণ
                  চিত্রসূত্র- pixabay. com

              আসুন এবার শুনি এমনই এক ভদ্রমহিলার কাহিনী। যিনি প্রত্যেকটি ব্যাপারে অযথা আতঙ্কিত হয়ে পড়তেন।ফলে তাঁর সাংসারিক জীবনেও সমস্যা নেমে আসে।

              তিনি এগারো বছর ধরে নিজের হাতে নিজের তৈরি নরকে বাস করেছিলেন।তাঁর স্বভাব ক্রমশ খিটখিটে হয়ে উঠেছিল।যার ফলে প্রচন্ড স্নায়বিক চাপে ভুগছিলেন।সব ব্যাপারেই তার অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা তাাঁকে  কখনোই সুস্থির থাকতে দিত না।

           তাঁর কথায়---

হয়তো আমি কেনাকাটা করতে বাইরে গেছি এমন সময় হঠাত্ মনে পড়ল ,আমি বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে ইস্ত্রি করছিলাম, আমি সুইচটি অফ করেছি তো?যদি সুইচটি অফ না করি তাহলে তো এতক্ষণ বাড়িতে আগুন ধরে গেছে!

         কিংবা যদি বাড়িতে বাচ্চাদের কাজের মেয়ের কাছে রেখে বাজারে যাই তাহলে হঠাত্ মনে হয়, কাজের মেয়েটা যদি চলে যায় তাহলে বাচ্চারা যদি সাইকেল নিয়ে বাইরে বেরিয়ে পড়ে। ওরা যদি এতক্ষণ গাড়ি চাপা পড়ে! তাহলে তো ওরা এতক্ষণে শেষ হয়ে গেছে!

         এই দুশ্চিন্তা কারণে ঐ ভদ্রমহিলার স্বামী তিতিবিরক্ত হয়ে উঠলেন। এবং এই কারণে তাঁদের বৈবাহিক সম্পর্কের ইতি ঘটল।

        পরে অবশ্য তিনি একটি আইনজীবীর সঙ্গে বিয়ে করেন এবং তাঁর বর্তমান স্বামী খুব শান্ত স্বভাবের।তাই তিনি ঐ মহিলার এই বদ অভ্যাস কে পাল্টাতে পেরেছিলেন।
     
             তিনি এখন কোন ঘটনা নিয়ে দুশ্চিন্তার করার আগে এটা ভেবে দেখে যে ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কতটুকু?  আর এই ঘটনা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমার হাত কতটা। যদি আমার এখানে করণীয় কিছু না থাকে তাহলে এটা মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ায় শ্রেয়।

              একবার বিখ্যাত "শো-ম্যান"  পি.টি বারম্যান কে  তাঁর  ম্যানেজার মাঝ রাতে ফোন করে খবর দিলেন যে, তাঁর সার্কাসের অর্ধেক অংশ আগুনে  ভস্মীভূত হয়ে গেছে।এখন তিনি কি করবেন?

            এ কথা শোনার পর বারম্যান বলেছিলেন,  এত রাতে কিছু করা যাবে না।আমি এখন ঘুমাতে যাব কাল সকালে দেখা যাবে কি করা যায়। 

               একবার ভাবুন, আমরা হলে এখানে কি করতাম! আসলে কিছুই করতে পারতাম না।কেবল দুশ্চিন্তা করে সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার সব রাস্তা বন্ধ করে দিতাম।

              তাই দুশ্চিন্তা করার আগে একটু ভাবা প্রয়োজন। তা না হলে এই দুশ্চিন্তা জীবনে পতন ডেকে আনবে।আর কেউ যদি দীর্ঘ দিন ধরে দুশ্চিন্তা করে তাহলে  একটা সময়ের পর সেই দুুুশ্চিন্তা ডিপ্রেশন ডেকে আনবে। আর এই ডিপ্রেশন ই মানুষের জীবনকে তছনছ করে দেয়।

             ডিপ্রেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আরও পড়ুন------------

  

             #3.হিংসা:


                অজ্ঞতা ইষা সৃষ্টি করে 

                  তোমার মনের মধ্যে যদি হিংসার মনোভাব থাকে  তাহলে তোমার পতন অনিবার্য। হিংসুটে  ব্যক্তি কখনো কোন উচ্চতর স্থানে পৌঁছাতে পারে  না।

           অনেক আছে অপরের ভাল সহ্য করতে পারে না।তাঁদের  অন্য  ব্যক্তি র ভাল কিছু দেখলে কষ্ট হয়।এটা একটা মানসিক রোগ।যে রোগের স্বীকার কম বেশি অনেকেই। অনেক শিক্ষিত বোধবুদ্ধি সম্পন্ন 
     মানুষ ও মনের মধ্যে হিংসা পুষে রাখে। 

            কিন্তু এক্ষেত্রে একটা কথা জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরী যে, আপনি যত অন্য কে দেখে হিংসা করবেন আপনার নিজের অবনতি নিজে তত ডেকে আনবেন।এটা চিরন্তন সত্য একটি কথা। 

        আপনি যদি অপরের প্রতি হিংসা করেন সেই হিংসার কুপ্রভাব তাঁর উপর পড়ে না। পুরো টাই পড়ে আপনার উপরে। 

          আমাদের বলা প্রতিটা কথার প্রতিধ্বনি আমাদের কাছে ফিরে আসে। তাই আপনি যদি অপরের প্রতি সহমর্মিতা পোষণ করেন তাহলে আপনি অপরের কাছ থেকে সেটা ঠিক ফিরত পাবেন।

        তাই তো প্রতিটা জ্ঞানী ব্যক্তি বিনয়ী হোন।প্রতিটা মহান মহান ব্যক্তির মনে প্রেম, দয়া, মায়া, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা বিরাজ করে।

           আর সাধারণ মানুষ সব সময় এই গুন গুলো কে এড়িয়ে চলে তাই সারাজীবন তাঁরা সাধারণ হয়েই রয়ে যায়। এতো সহজ সরল একটি বিষয় অথচ এটা আমাদের মাথায় ঢোকে না।ফলে তার ফল ভুগতে থাকি আজীবন ব্যাপী।
পতনের কারণ
                     চিত্রসূত্র- pixabay. com
 
                   পৃথিবীর কিছু মানুষ রহস্য সম্পর্কে অবগত। যাঁরা একবার ভালো থাকার, শান্তিতে থাকার রহস্য জানতে পারে তাঁদের জীবন প্রতিনিয়ত সুন্দর হতে থাকে। কিন্তু এই রহস্য এতোটাই সহজ সরল যে কেউ বিশ্বাস করে না। মানতেই চায় না।


                      অথচ পৃথিবীর প্রতিটা ধর্মগ্রন্থএ এই রহস্যের সন্ধান দেওয়া আছে।কিন্তু আমরা সে বিষয়ে ভ্রূক্ষেপ করি না।আমরা প্রয়োজনীয় শিক্ষা নেওয়ার বদলে অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে বেশি মাথা ঘামায়।ফলে সহজ সরল রহস্য টা ধরতে পারি না।

                   অনেক -কে আমি এমন কথা বলতে দেখেছি যে, ঐ তো অমক লোক প্রচণ্ড হিংসুটে তবুও তো সে ধনী ব্যক্তি! এখানে আমি একটা কথায় বলতে চাই, কেউ ধনী মানেই কি সে সুখী ব্যক্তি? তাঁর মানসিক সুখ শান্তি কতটা আছে?

                আসলে এতো কিছু আমরা ভেবে দেখি না।আমরা কেবল সবার উপর টা দেখতে অভ্যস্ত।একটা কথা মনে রাখবেন হিংসুটে ব্যক্তি কখনোই ভালো থাকে না।এবং জীবনে  খুব বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারে না।


              তাই আপনি যদি আপনার জীবনে পতন কে না গ্রহণ করতে চান তাহলে মন থেকে হিংসা বহিষ্কার করুন। নিজে শান্তি তে থাকুন, অন্য কে শান্তির সন্ধান দিন।এতে আপনার জীবন এক অন্য ধারায় বইবে।


                   #4.রাগ:


              রাগ মানুষের জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনে, 
     জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট করে। কোন ব্যক্তি যদি ক্রমাগত রাগ করতে থাকে তাহলে তাঁর জীবনীশক্তি দিন দিন কমে আসে। রাগ মানুষের সহজ জিনিস কে জটিল বানায়। 

                 যে ব্যক্তি রেগে থাকে তার কাছে সেই মুহূর্তে সব কিছুই বিষাদময় মনে হয়।রাগ কিন্তু আমাদের শরীরের বিপরীত পরিপন্থী। আমাদের শরীর রাগ,ঘৃণা, বিদ্বেষ,হিংসা এ সব কিছুই নিতে চায় না।যখন আমরা আমাদের শরীরে এগুলো প্রযোগ করি তখন ওগুলো বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হয়ে আমাদের শরীরে ফুটে ওঠে।
পতনের কারণ
                  চিত্রসূত্র- pixabay. com


              রাগের খারাপ প্রভাব সব থেকে বেশি পড়ে সংসারে। এই রাগের কারণে একটা সংসার তছনছ হয়ে যেতে পারে। সামান্য ভুল বোঝাবুঝি কারণে কত জীবন শেষ হয়ে যায়।কত মানুষ আছে যাঁরা রাগের বশে এমন এমন সিদ্ধান্ত জীবনে নিয়ে ফেলে যে পরে তার খেসারত গুনতে থাকে।

       ঐ জন্য কোরান শরীফ এ  বলা আছে রাগ হল হারাম


             যদি আপনি মানসিক শান্তি চান তাহলে রাগ ত্যাগ করুন।আমরা রাগ হলে আমাদের পাশে থাকা মানুষ কে বেশ কড়া করে দু'চার কথা শুনিয়ে দিয়ে নিজের মনে শান্তি পায়।আমরা একবারও ভেবে দেখি না এতে করে সেই মানুষ টা কতটা কষ্ট পায়।

           সে তো আপনার মতো আনন্দ, শান্তি কিন্তুই পাবে না।বরং আপনি তাঁর কাছ থেকে অনেক দূরে সরে যাবেন। কিংবা হয়তো আপনি একটা শত্রু তৈরি করে নিলেন। 

        আমার পরিচিত এমন একজনের কথা আজ বলব, যিনি তাঁর এলাকায় বেশ নাম করা এক ব্যক্তি ছিলেন। প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক।কিন্তু তিনি ছিলেন ভীষণ রাগী এবং বেশ অহংকারী ব্যক্তি।

          তিনি যে ব্যবসা টি করতেন সেখানে যাঁরা কাজ করত তাঁদের কাজে কোন রকম গাফিলতি হলে খুব উল্টো পাল্টা বলত এবং রেগে যেত।

           একদিন যাঁরা কাজ করে তাঁদের মধ্যে দুজন ব্যক্তি কে খুব অপমান করে।যে অপমান তাঁরা সেই মুহূর্তে সহ্য করলেও মন থেকে ভুলতে পারিনি।

             হঠাত্ একদিন লোকটি নিখোঁজ হল।এবং পরের দিন তাঁর  লাশ এক ডোবার মধ্যে পাওয়া গেল। পরে পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারল সেই দুজন কর্মচারী ওনাকে সুযোগ বুঝে খুন করে দিয়েছে। 

           যাঁরা এই কাজটি করল তারাও কিন্তু ঐ লোকটির মতো একি ভুল কাজ করল।নিজের রাগ কে সংবরণ করতে পারল না।ফলে সারাজীবন টা নষ্ট হল।

            তাই রাগ কেবল সব কিছু ধ্বংস করে কিছু গড়তে পারে না।তাই রাগ করা থেকে বিরত থাকুন।জীবন কে হাসি খুশি রাখুন।


                     #5.ভয়:

                      
                     ভয় মানুষ বিভিন্ন কারণে পেয়ে থাকে।এক একজন মানুষের এক একরকমের ভয় মনের মধ্যে বাসা বাঁধে।যাঁরা ভয়কে  জয় করতে শেখে তাাঁরা সব কিিছু নিজের আয়ত্তে  আনতে শিখে যায়।

          নেপোলিয়ান হিল বলেছেন সাত ধরনের 'ভয়' আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে উঁকি দেয়।এই ভয় গুলো আমরা কমবেশি সকলেই পায়।তবে ভয় গুলো কে  যে কাটিয়ে উঠতে পারে না সে জীবনে পিছিয়েে পড়ে।
ভয় গুলি হল-------

#.দারিদ্র ভয়।
#.সমালোচিত  হওয়ার ভয়।
#.স্বাস্থ্য হানির ভয়।
#.ভালোবাসা হারানোর ভয়।
#.বার্ধক্যের ভয়।
#.স্বাধীনতা হারানোর ভয়।
#.মৃত্যু ভয়।

               'ভয়' একটা সংক্রামক ব্যাধি ।আত্মবিশ্বাস গড়ে না তুলতে পারলে ভয় জীবন নষ্ট করে দেয়।ভয় শুধু একজন কেই ভীত করে না পাশের জন কেই ভয় ধরিিয়ে দেয় ।

                 ভয় যদি মনের মধ্যে আসে তখন এমন ভাব করতে হবে যে আমি একটু ও ভয় পাচ্ছি না।মনে মনে বার বার আমি ভীষণ সাহসী আমি ভীষণ সাহসী উচ্চারণ করা যায় তাহলে একটা সময়ের পর আপনি সত্যিই ভীষণ সাহসী হয়ে উঠবেন।

                 তা নাহলে আপনি যে জিনিসটা নিয়ে ভয় পেতে থাকবেন সেটাই আপনার উপর চেপে বসেছে।আপনি জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ হারিয়ে ফেলবেন।

         তাই নিজের জীবনে পতন ডেকে আনতে না চাইলে ভয় পাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

                   

                   #6.নেতিবাচক চিন্তা:


                      কিছু মানুষ আছে যাঁরা জীবনে কিছু পারুক আর না পারুক সব বিষয়ে নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা করতে উস্তাদ।  প্রচুর মানুষ ই নেতিবাচক   চিন্তাা করে জীবন দুর্বিসহ করে তোলে।
পতনের কারণ
                 চিত্রসূত্র-pixabay.com


            শতকরা চল্লিশজন মানুষ যে জিনিস কখনও ঘটবে না তার জন্য বৃথা উৎকণ্ঠা বোধ করে।যে জিনিসটা সে নিজে পরিবর্তন করতে পারবে না,তা নিয়ে উদ্বেগ- এ ভোগে তিরিশ শতাংশ মানুষ। স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনর্থক উদ্বেগ -এ ভোগে বারো শতাংশ।অন্যান্য নানারকম ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে দশ শতাংশ।

          আর সত্যি কারের সমস্যা নিয়ে উৎকণ্ঠিত হয় মাত্র আট শতাংশ।

              সুতরাং মানুষ যা যা উৎকণ্ঠিত হয় বা নেতিবাচক চিন্তা করে তার বিরানব্বই শতাংশ  ধ্বংসাত্মক এবং নিয়ন্ত্রণের অসাধ্য। আর  এটি যে কেবলমাত্র  স্বাস্থ্যহানি ঘটায় তা নয়,অনেক সময়   এ আত্মহত্যার মতো    ভয়ঙ্কর  দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।


        তাই নেতিবাচক চিন্তা আজই পরিত্যাগ করুন।


          #7.বদমেজাজ:


               প্রচুর মানুষের মধ্যে এই বদমেজাজ দেখা   যায়।কিছু কিছু মানুষের মুখমণ্ডল দেখলেই সে যে একটু বদমেজাজি সেটা বোঝা যায়।তাঁদের সঙ্গে মানুষ মন খুুলে কথা বলতে ভয় পায়।
পতনের কারণ
                  চিত্রসূত্র- pixabay. Com

             একদা আমেরিকায় এক বিখ্যাত ধনী মহিলা ছিলেন যিনি বিপুল পরিমাণ ধন সম্পত্তির মালকিন।তাঁর সমস্ত শরীরে বহুমূল্য হীরে জহরত মণি মাণিক খচিত অথচ তাঁর মুখমণ্ডল বড্ড অনুজ্জ্বল।

               সে মুখমণ্ডল থেকে শুধুই তীক্ষ্মতা এবং স্বার্থপরতা ব্যতীত অন্য কিছুই তেমনভাবে বিচ্ছুরিত হচ্ছিল না। একজন মহিলার মুখে যে কমনীয়তা কাম্য, তাঁর সেটাই ছিল অভাব।

             জমকালো পোশাকের চেয়ে মুখের মিষ্টতা অনেক বেশি কাম্য এটাই ঐ মহিলা জানত না।ফলে সবাই তাঁর ক্ষমতা কে পেত কিন্তু তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে কেউ পছন্দ করত না।

           আমরাই যদি বাড়িতে একটু মেজাজ গরম করে কথা বলি তাহলে দেখবেন বাড়ির পরিবেশ টা কি বিশ্রী হয়ে যায়। আর একটু খানি হাসি মুখে কথা পরিবেশ টাকেই সুন্দর করে তোলে।

           তাই আমাদের এমন বদমেজাজ কে ত্যাগ করতে হবে না হলে আপনার সংস্পর্শে কেউ আসতে চাইবে না। কিংবা এই খারাপ গুনের দোষে আপনি জীবন থেকে অনেক কিছুই হারিয়ে ফেলতে পারেন। তাই সাবধান।

             #8.অতিরিক্ত লজ্জা:


           আপনার যদি এই দোষ থেকে থাকে তাহলে নিজেকে পাল্টান।এমন ব্যক্তি র সংংখ্যা বেশ  অনেক  যাঁরা কেবলমাত্র লজ্জার কারণে নিজেকে  গুটিয়ে রাখে নিজের    ভিতরের প্রতিভাকে বাইরে প্রকাশ করতে পারে না ।

           এমনই একটি মেয়ে যে তাঁর বাবার কষ্ট দূর করতে বদ্ধপরিকর ছিল কিন্তু নিজের লজ্জা এবং ভয়ের ফলে নিজেকে গুটিয়ে রাখত।

          সে গান করতে ভালোবাসত। তাই একদিন একটি নাইট ক্লাব এ গান গাইতে গেল কিন্তু সে কিছুতেই প্রচুর দর্শকদের সামনে গান করতে পারছিল না। কারণ তাঁর  সামনের দাঁত গুলো ছিল উঁচু ।ফলে সে বার বার ঠোঁট দিয়ে দাঁত লুকানোর চেষ্টা করছে। এতে তাঁর গান বিশ্রী হয়ে যাচ্ছে।
পতনের কারণ
                         চিত্রসূত্র-pixabay.com

           কিন্তু মেয়েটির ভাগ্য ভাল সেখানেই তাঁর একজন ভক্ত ছিলেন যে এই মেয়েটির গান আগে শুনেছে। ফলে সেই লোকটি তাঁকে নিজের দাঁত নিয়ে লজ্জা না পেয়ে মুখ খুলে গান গাইতে অনুরোধ করল।

        যার ফল স্বরূপ এই মেয়েটি এখন আমেরিকার একজন বিখ্যাত গায়িকা। সে যদি তাঁর লজ্জা কে ত্যাগ করতে পারত তাহলে আজ তাঁকে কেউ চিনত না।

          তাই অহেতুক লজ্জার কবলে নিজেকে শপে দেবেন না।

                   #9.অহংকার:


                 এ দোষ প্রচুর মানুষের মধ্যে আছে। কথায় আছে  অহংকারের পতন অনিবার্য। দুদিনের এই জীবনে কেবল বোকা মানুষ রাই অহংকার করে।

              আপনার যদি প্রচুর ধন সম্পত্তি থেকে থাকে তাহলে তা নিয়ে অযথা অহংকার না করে মানুষের সেবায় নিয়োজিত হোন তাহলে জীবন টাকে সত্যি কারের উপভোগ করতে পারবেন।দুঃখী মানুষের এক চিলতে হাসি আপনার জীবন টা পাল্টে যাবে।

          কখনো কি খোঁজ নিয়ে দেখেছেন আপনার বাড়িতে যে মানুষ টা প্রতিদিন কাজে আসে সে ভাল আছে কি না! যে ছেলেটা খবরের কাগজ দে সে কেমন আছে সে এই মূহুর্তে কোন সমস্যার সম্মুখীন নয় তো?
     
            একটু সামান্য একটু মুখের কথা টা জিজ্ঞাসা করুন তাহলে দেখবেন সে আপনাকে কতটা শ্রদ্ধা করছে ভালবাসছে। অর্থ না দিয়েও কিন্তু আমরা একজন আরেকজনের পাশে দাঁড়াতে পারি তাঁকে বিপদের সময় সাহস জোগাতে পারি।

       তাই ভালো থাকতে চাইলে অহংকার মন থেকে মুছে ফেলুন। দেখবেন আপনি জীবনে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন।

            #10.লোভ:


                   লোভী মানুষকে কেউ পছন্দ করে না।অনেক ব্যক্তি কে দেখা যায়  যাঁরা    লোভের বশবর্তী হয়ে অনেকে খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়।

          লোভের সব থেকে ভয়ঙ্কর দিক হল অর্থনৈতিক দিক দিয়ে রাতারাতি বড় হওয়ার নেশা।এ নেশার কবলে পড়ে বহু পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়।

       বর্তমানে সব থেকে খারাপ একটি বদ নেশা হল লটারি কাটা।এমন   প্রচুর মানুষ আছে যাঁরা সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে কিছু অর্থ উপার্জন করে আর সেই অর্থ  টা সংসারেে খরচ করার বদলেে রাতারাতি বড় লোক হওয়ার  নেশায় বস নষ্ট করে ফেলে দিনের পর দিন।

    এছাড়া আরো প্রচুর প্রলোভন ভরানো পদ্ধতি আছে যেগুলো কারণে মানুষের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে।

       কিন্তু পরিশ্রম না করে মাথার ঘাম পায়ে না ফেলে আজও পর্যন্ত কেউ ধনী হতে পারিনি।তাই লোভ পরিত্যাগ করে বুদ্ধি খাটিয়ে চলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

            তাই আপনার বা আপনার আশেপাশের কারো যদি এই স্বভাব গুলো থেকে থাকে তাহলে সেগুলোর থেকে অস্তে অস্তে বেড়িয়ে আসার চেষ্টা করুন। না হলে এই স্বভাব গুলো একজন মানুষের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

         যদি আমার লেখা ভাল লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।আর কেমন লাগল সেটা একটা কমেন্টস করে অবশ্যই জানাবেন।

Tags,পতনের কারণ 

ধন্যবাদ।
তথ্য সূত্র সংগৃহীত।
চিত্র সূত্র- pixabay. Com

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.